প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যাকারীদের বিচার হলেও এ হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রকারী ও কুশীলব কারা, তা উদ্ঘাটনের তাগিদ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহ’র লেখা ‘বিচারক জীবনের কথা’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
https://dainikshomayershangbad.com
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘বাঙালিরা কি আসলেই মানুষ হয়েছে? পঁচাত্তরের ঘটনায় কি মনে হয় আমরা বাঙালিরা মানুষ হয়েছি? কারণ বঙ্গবন্ধুকে যারা গুলি করেছে তারা বাঙালি। বঙ্গবন্ধুকে সামনে থেকে যারা গুলি করেছেন তারা স্বীকার করেছেন যে, আমরা খুন করেছি। প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু কি তারাই এর সঙ্গে জড়িত? নাকি অনেক বড় চক্র এর পেছনে কাজ করেছে, যেটি এখনো উদ্ঘাটন হয়নি। কিন্তু এটি উদ্ঘাটন হওয়া উচিত বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে কলকাঠি কারা নেড়েছেন। ’
বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহর লেখা ‘বিচারক জীবনের কথা’ বইটির এ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মো. নুরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি বোরহান উদ্দীন।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক, গবেষক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, কর্মকর্তা ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু আমার কাছে বাংলার মাটি, বাংলার বাতাস, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, বাংলা ভাষা। বাংলাদেশের কথা বলতে গেলে, বাংলা ভাষার কথা বলতে গলে, বাংলার মানুষের কথা বলতে গেলে বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে হবে।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রকারী কুশীলবদের খুঁজে বের করতে কমিশন গঠনের তাগিদ দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
কমিশন গঠনের বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান বলেন, ‘কমিশন গঠন হলে এ হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত তথ্য-উপাত্ত বের হয়ে আসবে এবং ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। ’
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘একটি কমিশন হওয়া উচিত। কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, দেশি-বিদেশি কারা সম্পৃক্ত ছিল। একটি কমিশনের মাধ্যমে এটি উদ্ঘাটিত না হলে আগামী প্রজন্ম জানতে পারবে না যে কী ঘটনা সেদিন ঘটেছিল। শারীরিকভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে কয়েকজন সামরিক বাহিনীর লোক। তাদের বিচার হয়েছে, ফাঁসি হয়েছে। এটাই কি যথেষ্ট? ইতিহাসকে সঠিক পথে আনার জন্য আমার মনে হয়, আমি যে প্রস্তাব রেখে গেলাম সরকার এটি বিবেচনা করবে।’