মিরপুরের পীরেরবাগে মায়ের দোয়া জেনারেল স্টোরে ৭ বছরের শিশু জিহাদ ২০ টাকা দিয়ে দুটি ডিম কিনতে এলে দোকানদার ফিরিয়ে দেন এবং আরও ৪ টাকা নিয়ে আসতে বলেন।
এদিকে ডিম না নিয়ে ফিরে যাওয়ায় জিহাদের মাসহ দোকানে এসে ডিম না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে দোকানদার বলেন, ডিম ১২ টাকা করে। রাগে-ক্ষোভে ওই নারী বলেন, সবকিছুরই দাম বেড়েছে। ডিম দিয়ে দুমুঠো ভাত খাব সেটাও আর হচ্ছে না। ৭ টাকা, ৮ টাকার ডিম এখন ১২ টাকা। আর কত বাড়বে।
দোকানদার সাইফুল ইসলাম বলেন, যারাই ডিম কিনতে আসছে তারাই এমন অবাক হচ্ছে। আসলে এর আগে তো কখনও এত দাম হয়নি। আমাদের আর কী করার আছে ১০০ ডিম ১ হাজার ১২০ টাকায় কিনে এনে আর ১২ টাকায় বিক্রি ছাড়া উপায় থাকে না। অনেক সময় দুয়েকটা ডিম নষ্ট থাকে। আনার খরচ আছে। কী আর করব।
এমন চিত্র বেশিরভাগ দোকানেই। ডিম কিনতে এসে দাম শুনে অনেকেই রেগে যাচ্ছেন। কেউ সরকারের ওপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন। তবে তো উপায় নেই বাধ্য হয়েই বেশি দামে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারিতেই ১৩৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে ডিম। ১শ ডিম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ১২০ টাকা। আর খুচরা দোকানে এক হালি ডিম কিনতে গুনতে হচ্ছে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম বলেন, মুরগির খাবারের দাম বাড়ায় মুরগির উৎপাদন কমেছে। অনেকেই মুরগি উঠাচ্ছেন না। পাশাপাশি নতুন করে পরিবহন খরচও বেড়েছে, যে কারণে দাম বেড়েছে ডিমের। এদিকে কাপ্তানবাজারে পাইকারিতে ১শ ডিম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০ টাকা।
এ বাজারের ডিম ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম সময়ের আলোকে বলেন, গত দুদিন থেকে ডিমের দাম বেড়েছে পাইকারি ডিমের ডিলাররা ১শ ডিম বিক্রি ১ হাজার ৮০ টাকায় বিক্রি করছে। দোকানদাররা সেটা নিয়ে গিয়ে হয়তো ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ১২০ টাকায় বিক্রি করছে। বাংলাদেশ ২০১৯-২০ অর্থবছরেই ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। সে সময়ে দেশের মানুষের পুষ্টি ও খাদ্য চাহিদা মেটাতে ডিমের প্রয়োজন ছিল ১ হাজার ৭৩২ কোটি ৬৪ লাখ পিস। ওই অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছিল ১ হাজার ৭৩৬ কোটি ৪৩ লাখ পিস।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ডিম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ২৬৬ কোটি ৪৪ লাখ পিস।