
ফাইল ছবি
পবিত্র হজ পালনের জন্য ৬০ হাজার ১৪৬ জন বাংলাদেশি ইতোমধ্যে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। যার মধ্যে ১৩ জন ইন্তেকাল করেছেন। বর্তমানে পবিত্র নগরীতে হজের অপেক্ষায় রয়েছেন ৬০১৩৩ জন। আজ বুধবার (৬ জুলাই) শুরু হচ্ছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। সেখানে তারা অংশ নেবেন।
গত ৩১ দিনে (৫ জুলাই দিবাগত রাত ২টা পর্যন্ত) ৬০ হাজার ১৪৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। মোট ১৬৫টি ফ্লাইটে সৌদি গেছেন এই হজযাত্রীরা। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ৮৭টি, সৌদি এয়ারলাইন্স পরিচালিত ৬৪টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা ১৪টি।
এ পর্যন্ত সৌদি আরবে মোট ১৩ জন হজযাত্রী/হাজি ইন্তেকাল করেছেন। যারমধ্যে পুরুষ ৯ জন, নারী চারজন। মক্কায় ১১ জন এবং মদিনা দু’জন।
পবিত্র হজ পালন করতে আজ বুধবার মিনার উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এর মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে।
মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মিনা। হজযাত্রীরের কেউ বাসে, কেউ বা হেঁটে বা অন্য যানবাহনে যাবেন মিনায়।
হজের অংশ হিসেবে তাঁরা পাঁচ দিন মিনা, আরাফাত, মুজদালিফা, মক্কা এবং আবার মিনায় অবস্থান করবেন। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা হয় স্থানীয় সময় ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রস্তুতি নিয়েও গত দুই বছর অনেকেই পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরব যেতে পারেননি। তবে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় এ বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১০ লাখ মুসল্লিকে হজ পালনের সুযোগ দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৬০ হাজার মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন।
হজযাত্রী প্রত্যেককে নিজ নিজ মোয়াল্লেম কার্যালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কখন মিনার উদ্দেশে রওনা দেওয়া হবে। একইভাবে মিনা, আরাফাত, মুজদালিফায় কিভাবে ও কখন রওনা হবেন, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয় আগেভাগে।
মিনার যেদিকে চোখ যায়, তাঁবু আর তাঁবু। চৌচালা ঘরের মতো এসব তাঁবুতে থাকবেন হজযাত্রীরা। এ সময় মিনায় আগুন জ্বালানো নিষেধ। কারণ, এতে তাঁবুতে আগুন লেগে যেতে পারে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এসব তাঁবুতে আছে বাতি, বাথরুম।
৮ জিলহজ মিনায় সারা দিন ও ৯ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন হজযাত্রীরা। আরাফাত থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় রাত যাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন তাঁরা। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরে আসবেন। মিনায় এসে বড় শয়তানকে পাথর মারা, দমে শোকর বা কোরবানি দেওয়া ও মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে মক্কায় ফিরে কাবা শরিফ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া সাঈ করবেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন।
হজ শেষে বাংলাদেশি হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ১৪ জুলাই। ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ৪ আগস্ট।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীর কোটা ছিল চার হাজার জন (রাষ্ট্রীয় খরচ ও গাইডসহ), অন্যদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কোটা ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট গত ৫ জুন শুরু হয়। সৌদি আরবে যাত্রার শেষ ফ্লাইট ৩ জুলাই। হজ শেষে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ১৪ জুলাই। ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ৪ আগস্ট।