এক লাফে ডিজেল ও কেরোসিনের লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্তে বিভিন্ন জেলায় খণ্ড খণ্ডভাবে গণপরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা। এবার সেই ডাকে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় পরিবহন মালিক সমিতি। এতে আজ (শুক্রবার) সারাদেশে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকছে।
গণপরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতীতে তেলের দাম বাড়লে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। পরিবহন ভাড়া পুনর্নির্ধারণ হয়েছে। এবার এক লাফে তেলের দাম ২৩ শতাংশ বেড়েছে। অথচ এবার তেলের বাড়তি দাম কার্যকর হওয়ার চতুর্থ দিনে ভাড়া পুনর্নির্ধারণে বৈঠক ডেকেছে বিআরটিএ। সেটিও আবার ডাকা হয়েছে পরিবহনমালিকদের চিঠি পেয়ে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কেন্দ্রীয়ভাবে গণপরিবহন চালানোর কথা জানিয়েছেন। তবে রাতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন।
তিনি বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শুক্রবার (০৫ নভেম্বর) কোনো গণপরিবহন চলবে না। জেলার পরিবহনমালিকরা তাদের পরিবহন না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনা নিয়ে আমরা তাদের এই অবস্থানকে সমর্থন করেছি।
‘আগামী রোববার বিআরটিএর সঙ্গে আমাদের বৈঠক আছে। বৈঠকে ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেব।’
এর আগে বাস চালানো বন্ধের ঘোষণা দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন বাস মালিক সমিতির সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল। তিনি বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়। ৮০ টাকা করে ডিজেল ও তেল কিনে গাড়ি চালানো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
‘কাল থেকে আমাদের তেল নেয়া বন্ধ হয়েছে। আজকে অনেক গাড়ির মালিক রাস্তায় গাড়ি নামাননি। এত বাড়তি দামে কিনে গণপরিবহন চালানো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। হঠাৎ ডিজেলের এই দাম বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিকতা নেই। তাই অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি।’
সিলেটে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির জরুরি সভা শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘোষণা দেয়া হয়। কুমিল্লায় ধর্মঘটের ডাক এসেছে অনির্দিষ্টকালের জন্য।
কুমিল্লা জেলা সড়ক পরিবহনের মালিক গ্রুপের সভাপতি কবির আহমেদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধিতে আজকে পরিবহন মালিকরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শুক্রবার থেকে গাড়ি চালাবেন না। বাস ও ট্রাকমালিকদের অনুরোধে আমরা সাংবাদিকদের এই সিদ্ধান্ত জানাতে বাধ্য হয়েছি।’
জেলা মোটর পরিবহন মালিক গ্রুপ, মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও দিনাজপুর ট্রাক-ট্যাংক লরি ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা একযোগে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তারা জানান, সকাল থেকে দিনাজপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যাবে না। ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানও ছেড়ে যাবে না।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।