আগামী ২২ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। প্রতিবছর জাঁকজমভাবে পালিত হলেও এবার নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে সীমিত পরিসরে উদযাপিত হবে এই শারদীয় উৎসব। রাত ৯টার মধ্যে মন্দির বন্ধসহ মেনে চলতে হবে বেশ কিছু বিধি-নিষেধ। অষ্টমীতে ঢাকায় কুমারী পূজাসহ বিজয়া দশমীতে হবে না কোনো শোভাযাত্রা।
আজ শনিবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব এথা জানান বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা। আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে পূজা আয়োজন সংক্রান্ত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী। এছাড়া সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
সভায় নেতারা জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় মহালয়া। যার মাধ্যমে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। সাধারণত মহালয়ার ৭ দিন পর মহাষষ্ঠী অনুষ্ঠিত হলেও এবার আশ্বিন মাস মালমাস হওয়ায় প্রায় এক মাস পর দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ২১ অক্টোবর মহাপঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে দূর্গাপূজা। তবে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে ২২ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে।
তারা আরো জানান, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার দুর্গাপূজা সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হবে। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে ভক্ত, পুরোহিত, দর্শনার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে। সন্ধ্যার মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে আরতী অনুষ্ঠান। এরপর ভক্ত ও দর্শনার্থীদের মন্দিরে আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হবে।
লিখিত বক্তব্যে নির্মল কুমার চ্যাটার্জী বলেন, অন্যান্য বছর সারারাত ভক্ত ও দর্শনার্থীরা মন্দিরে দেবী দর্শন করতে পারলেও এবার রাত ৯টার মধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হবে মন্দির। এরপর আর কোনো দর্শনার্থী বা ভক্তকে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এছাড়া জনসমাগম এড়াতে এবার প্রসাদ বা খিচুড়ি বিতরণ করবে না মন্দির কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরো বলেন, সকাল বেলা অঞ্জলি দিতে ভক্তরা মন্দিরে আসেন। এ সময় সংক্রমণ এড়াতে সকলকে মাস্ক পরিধানসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এছাড়া ভক্তরা বাড়ি থেকে ডিজিটাল মাধ্যমে অঞ্জলি দিতে পারেন কিনা সেটির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পরিষদের নেতারা আরো জানান, মন্দিরে প্রবেশের জন্য নারী ও পুরুষের আলাদা আলাদা পথ করা হবে। প্রতি বছর ঢাকায় কুমারী পূজা হলেও এবার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এটি হচ্ছে না। তবে সপ্তমীর দিন দুপুর ১২টা ১ মিনিটে দেশের সকল মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। যেখানে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস থেকে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের মুক্তি ও আক্রান্তদের দ্রুত আরোগ্য লাভের প্রার্থনা করা হবে।
আগামী ২৬ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মাধ্যমে এ বছরের দুর্গাপূজার সমাপ্তি হবে জানিয়ে তারা আরো বলেন, এবার বিজয়া দশমীতে কোনো শোভাযাত্রা হবে না। প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা মন্দিরগুলোকে নিজ উদ্যোগে করতে হবে।
নেতারা জানান, এবার সারাদেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে মোট ৩০ হাজার ২৩১টি। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের তুলনায় এবার পূজা কম হচ্ছে ১ হাজার ১৮৫টি। গতবার পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৩১ হাজার ৩৯১টি।
24livenewspaper.com
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।