জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে অংশ নিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অধিবেশনে ফাঁকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজ’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বীরত্বগাথা তুলে ধরেন তিনি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুরে ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ’ অনুষ্ঠানের মঞ্চে তিনি তার দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা জুলাই বিপ্লব চলাকালীন ও এরপরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রের ছবি সংবলিত ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ শীর্ষক আর্টবুক বিল ক্লিনটনকে উপহার দেন।
পরে ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজে’ বক্তব্যে ড. ইউনূস বিগত সরকার কীভাবে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং সেই গুলির সামনে কীভাবে ছাত্ররা বুক পেতে দাঁড়িয়েছে—বিশ্ব নেতাদের সামনে সেই বীরত্বগাথা তুলে ধরেন। একপর্যায় নতুন বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলা শুরু করেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা তার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আব্দুল্লাহকে সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরে সরকার পতনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে উল্লেখ করেন। মাহফুজসহ তিনজনকে স্টেজে আসার আহ্বান জানান। বাকি দুজন হলেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা তিথি এবং হাইড্রোকো প্লাসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিন রাজিন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘তারা যেভাবে কথা বলে এরকম কথা আমি কখনও শুনিনি। তারা নতুন পৃথিবী, নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রস্তুত। প্লিজ আপনারা তাদের হেল্প করবেন। যেন তারা তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। এ গুরু দায়িত্ব আমাদের সবার নিতে হবে। এসময় তিনি বিল ক্লিনটনের হাত ধরে বলেন, আপনি আমাদের সাথে আছেন এ স্বপ্ন পূরণে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদেরকে দেখতে অন্য তরুণদের মতো মনে হলেও আপনি যখন তাদের কাজ দেখবেন, বক্তব্য শুনবেন আপনি অবাক হবেন। তারা সারা দেশ নাড়িয়ে দিয়েছে। তারা তাদের বক্তব্য, ত্যাগ, তাদের কমিটমেন্ট থেকে পিছিয়ে যায়নি। তারা বলে, আপনারা চাইলে আমাদের হত্যা করতে পারেন, কিন্তু আমরা পথ ছেড়ে যাবো না।’
এ সময় মাহফুজকে সামনে এগিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘গণ-অভুত্থানের পেছনের কারিগর মাহফুজ। যদিও মাহফুজ সব সময় বলে, সে একা নয়, আরও অনেকে আছে। যদিও সে গণ-অভ্যুত্থানের পেছনের কারিগর হিসেবে পরিচিত।’
এটা খুব সুশৃঙ্খল আন্দোলন ছিল উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা হঠাৎ করে হয়েছে এমন কিছু নয়। খুবই গোছানো আন্দোলন। এছাড়াও এত বড় আন্দোলন হয়েছে মানুষ জানতো না— কে আন্দোলনের লিডার? যার ফলে একজনকে আটক করা যেত না। বলাও যেত না যে, একজনকে আটক করলে আন্দোলন শেষ। তারা যেভাবে কথা বলেছেন, তা সারা বিশ্বের তরুণদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।’
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।