ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন প্রতিটি ওয়ার্ডেই ব্যায়ামাগার নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে করপোরেশনের দ্বিতীয় পরিষদের সপ্তদশ বোর্ড সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমাদের এখন ৭৫টি ওয়ার্ডে মাত্র ১৭টি শরীরচর্চা কেন্দ্র আছে। আমরা প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে আমাদের সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্রের সাথে একটি শরীরচর্চা কেন্দ্র রাখতে চাই।
‘বর্তমানে আমাদের মাত্র ৩৫টি সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র রয়েছে’ জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ‘আমরা সেটাকে বৃদ্ধি করে ৭৫টি ওয়ার্ডেই সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র নির্মাণ করতে চাই। সেই লক্ষ্যে আমরা সব জায়গায় শরীরচর্চা কেন্দ্র রাখতে চাই। আমাদের মূল পরিকল্পনা হলো, প্রত্যেকটা ওয়ার্ডেই জনগণের জন্য ব্যায়ামাগার সেবা নিশ্চিত করা। ’
এ সময় নীতিমালা প্রণয়নের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শরীরচর্চা কেন্দ্রগুলো বেশির ভাগই ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। কোনো রকমভাবে আমাদের কাউন্সিলরগণের সহযোগিতায় আমরা সেগুলো পরিচালনা করে চলেছি। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং কর্মপরিকল্পনার আলোকে আমাদের তরুণ এবং জনগণের কল্যাণে যেন সেগুলো ব্যবহৃত হয়, সেদিকটা নিশ্চিত করা। এটা আমাদের মূলত কল্যাণমূলক ও সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ। ’
তিনি আরো বলেন, ‘এখান থেকে আমরা খুব বেশি রাজস্ব আয় করতে চাই না। আমাদের জনগণ, বিশেষ করে তরুণ সমাজ যেন বিপথে না গিয়ে সুস্থ শরীরচর্চায় মনোনিবেশ করতে পারে, সে জন্য প্রত্যেকটা ওয়ার্ডেই আমরা এই ব্যবস্থা রাখতে চাই। যাতে করে সেই এলাকার তরুণ প্রজন্মসহ সব শ্রেণির জনগোষ্ঠী যেন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারে। সে জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হলে পরিচালন নীতিমালার প্রয়োজন রয়েছে। ’
কমিটির সুপারিশের আলোকে এলাকাভেদে ব্যায়ামাগারগুলোর ভাড়া নির্ধারণ করা হবে জানিয়ে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘যারা আবেদন করবেন তাদের সবার জন্য এলাকাভেদে ভাড়াটা নির্ধারিত হবে। এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে কমিটির মাধ্যমে এই ভাড়াটা নির্ধারণ করতে চাই। ব্যাবসায়িক এলাকায় হয়তো প্রতি বর্গফুট ১০০ টাকা হারে হতে পারে। কিন্তু অনেক এলাকায় ১০-২০ টাকাও হয়তো বেশি হয়ে যাবে। সেটা আমরা কমিটির মাধ্যমে নির্ধারণ করব। ’
বিদ্যমান আয়তন, সুবিধাদি ও যন্ত্রপাতি বিবেচনা করে ব্যায়ামাগারগুলোকে ক, খ ও গ তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। সে জন্য করপোরেশনের সাথে অংশীদাত্বের ক্ষেত্রে বাৎসরিক আয়ের ভাগাভাগির ক্ষেত্রেও ভিন্নতা থাকবে। যেসব ব্যায়ামাগারে সিটি করপোরেশনের যন্ত্রপাতি থাকবে, সেসব ব্যায়ামাগারের বাৎসরিক আয়ের ১৫% এবং যেসব ব্যায়ামাগারে করপোরেশনের যন্ত্রপাতি নেই তা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাৎসরিক আয়ের ১০% সিটি করপোরেশনকে প্রদান করতে হবে। যেসব ক্ষেত্রে একাধিক ইজারাদার পাওয়া যাবে সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ইজারাদারকে ইজারা প্রদান করা হবে। তবে যারা ব্যায়ামাগার পরিচালনা করবেন তাদের অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।
বোর্ড সভায় অন্যদের মধ্যে করপোরেশনের কাউন্সিলররা ছাড়াও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর সিতওয়াত নাঈম, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।