উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে রংপুরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এতে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরে বসবাস করা প্রায় আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা পরিস্থিতির কারণে চরে আবাদ করা আমন ধান, পাটসহ বিভিন্ন শাক সবজির খেত তলিয়ে গিয়েছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করছে নদীতীরবর্তী বাসিন্দারা।
রংপুর পাউবো সূত্রে জানা যায়, উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে সোমবার রাতে ডালিয়া পয়েন্টে বিপত্সীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যার পানি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেয় পাউবো। তবে গতকাল সকালে তিস্তা নদীর পানি কিছুটা কমেছে। দুপুর ১২টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৭৭ সেন্টিমিটার এবং বেলা ৩টার দিকে রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার। এখনো বিপত্সীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বিপত্সীমা অতিক্রম করায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত নোহালী, কোলকোন্দ, লক্ষ্মীটারী, গজঘণ্টা ও মর্ণেয়া ইউনিয়নের আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকে ঘরের আসবাব, গবাদিপশু নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে গঙ্গাচড়ায় বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ উদ্দিন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিমুর রহমানসহ অন্যরা। বন্যাকবলিতদের সহায়তার জন্য চাহিদা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পাঠানোর কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, তিস্তা নদীর পানি বাড়ায় আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিগত সময়ে যেসব গ্রামে পানি ঢোকেনি এবার সেসব গ্রামও প্লাবিত হয়েছে। চরের মানুষের ঘরবাড়ি, গাছপালা, ফসলি খেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পশ্চিম বাগেরহাট আশ্রয়ণ কেন্দ্র এলাকার ৪০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও তত্সংলগ্ন ভারতের উজানের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে।