দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় মসজিদে জামায়াতে নামাজের জন্য ৯টি নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে অন্যান্য ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতেও যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. সাখাওয়াৎ হোসেনের সই করা এক জরুরী বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সারা দেশে করোনায় আক্রান্তের হার দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের গত ২৬ জুনের ডিওপত্রে কতিপয় বিধিনিষেধ আরোপ করে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও মসজিদে জামাতে নামাজের জন্য আবশ্যিকভাবে ৯টি নির্দেশনা পালনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।
১. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে এবং আগত মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে।
২. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে, সুন্নত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
৩. মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে।
৪. কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
৫. শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যে কোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশগ্রহণ করা হতে বিরত থাকবে।
৬. সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতে মসজিদের ওজুখানায় সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।
৭. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।
৮. করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে খতিব, ইমাম ও মুসল্লিরা দোয়া করবেন।
৯. খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।
অন্যান্য সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান-উপাসনালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
এসব নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর আগে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ৬ নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান-সামাজিক অনুষ্ঠান-শপিংমল-হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ সব জায়গাতে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করে।