তিন বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খুবই প্রয়োজনীয় ছাড়া অন্য ব্যয়গুলো আমরা আপাতত স্থগিত রাখব। যদি সুদিন আসে তখন আমরা করব। সত্যি কথা বলতে, জানি না ভবিষ্যতে আমরা কতটুকু করতে পারব। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে, খুব স্বাভাবিকভাবে আমরা যে বাজেট দেই সেভাবে কিন্তু বাজেটটা দিয়েছি। বাজেটটা দিয়ে আমরা লক্ষ্য স্থির রেখেছি। এর ভেতরে যতটুকু অর্জন করতে পারি। অনেকে মনে করেছে, রিজার্ভ আমরা ধরে রাখতে পারব না। আল্লাহর রহমতে রিজার্ভ আমাদের বেড়েছে।’
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী পর্ষদ-২০২০ (১ম পর্ব) এ অংশগ্রহণ (ভার্চুয়াল) করে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে যতটুকু সহযোগিতা দেয়া যায় আমরা সেটা করে যাচ্ছি। যার জন্য বাজেটে কিন্তু আমরা টাকা-পয়সা কম দেইনি। কিন্তু ব্যয় করার সময় সকলকে একটু সীমিতভাবে ব্যয় করতে হবে। এই কারণে বাজেটে আমরা বরাদ্দ ধরে রেখেছি। কিন্তু এই অর্থনৈতিক অবস্থায় কতটুকু অর্থ আমরা সংগ্রহ করতে পারব আর কতটুকু ব্যয় করতে পারব সেখানে আমাদের এখন থেকে হিসাব করে চলতে হবে। সেই অনুরোধটা আমি সকলকে করব।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের সঙ্গে থেকে মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়া, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কাজ। সেই কাজগুলো অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে আপনারা করে যাচ্ছেন। আজকে করোনার জন্য সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে। খাদ্য সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে আমরা কতগুলো পদক্ষেপ নিচ্ছি, কারণ আমরা শুরু থেকে খুব সজাগ ছিলাম। যা-ই হোক আমাদের দেশের খাদ্যের অভাব যেন না হয়। কৃষিকাজ এবং কৃষিতে ভর্তুকি দেয়া, সব রকম সহযোগিতা করা এবং খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য আমরা সব রকম ব্যবস্থা নেই। এই একটা দিক থেকে আমরা নিশ্চিন্ত আছি যে আমাদের খাদ্যে কোন সঙ্কট হবে না- আল্লাহর রহমতে। সেই সঙ্কট আমরা হতে দেব না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘যেজন্য আমি ইতোমধ্যে নির্দেশ দিয়েছি, এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে বা কোনো জলাভূমি যেন পড়ে না থাকে। ফলে আজকে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে দ্বিতীয়। চাল উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে আছি।’
তিনি বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তাটা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কথায় বলে পেটে খেলে পিঠে সয়। সেই খাদ্য নিরাপত্তাটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেন সচল থাকে এজন্য আমরা বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। করোনা থাকা সত্ত্বেও আমাদের বাজেট আমরা দিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদি বিশ্বব্যাপী মন্দা চলতেই থাকে বা খারাপ হয় তাহলে হয়তো পারব না। কিন্তু পারব না বলে আমি পিছিয়ে যেতে রাজি নই। আমাদের আয়োজন থাকবে, প্রস্তুতি থাকবে এবং যতটুকু পারি আমরা করব এটাই আমাদের লক্ষ্য। মুজিববর্ষে আমাদের লক্ষ্যই ছিল- বাংলাদেশকে আমরা দারিদ্র্যমুক্ত করব। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি আমরা ৮.২ ভাগ অর্জন করব এটা আমাদের লক্ষ্য ছিল। এপ্রিল মাস পর্যন্ত আমরা ৭.৮ ভাগ অর্জনও করেছি। কিন্তু করোনার ধাক্কায় সেটা ৫.৮ ভাগে নেমে এসেছে। তারপরও আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’
তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করেছে, রিজার্ভ আমরা ধরে রাখতে পারব না। আল্লাহর রহমতে রিজার্ভ আমাদের বেড়েছে। ৩৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার আমাদের এখন রিজার্ভ। আমাদের রেমিট্যান্সও যথেষ্ট আসছে। সেখানে আমরা প্রণোদনা দিয়েছি।’
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।