পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলামকে ‘আওয়ামী লীগে নিয়ে নেওয়া’র জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ‘অনুরোধ’ করেছেন বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) হারুনুর রশীদ।
সোমবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে এ কথা বলেন তিনি।
সংসদে হারুন বলেন, ‘যে বিষয়টি উদ্বেগের—পুলিশের আইজিপি ও কমিশনার যে ভাষায় কথা বলছেন, পোশাক খুলে তাদের রাজনীতিতে দেন না কেন? তাদের আওয়ামী লীগে নিয়ে নিন। তারপর যা ইচ্ছে তারা বলুক। পুলিশের আইজিপি ও কমিশনার ওই পোশাক পরে যে ভাষায় কথা বলেছে, এটা বলতে পারে না।’
তিনি বলেন, অপরাধীদের স্থান পুলিশে হবে না। পুলিশে অপরাধের সংজ্ঞা কী? উনি নিজে যে অপরাধ করছেন—বোট ক্লাবের সভাপতি এখনও রয়েছেন। এটি কোন সংবিধানে আছে, এখন পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিকে জানাননি। অপরাধ যদি শীর্ষ জায়গা থেকে হয়ে থাকে, তার বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা না নেন, তাহলে আপনি পুলিশ সদস্যদের কী অপরাধে ব্যবস্থা নিবেন। শীর্ষ পর্যায়ে যারা রয়েছেন। তারাই সবচেয়ে বেশি অপরাধ করছেন।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দুর্বিষহ যন্ত্রণায় রয়েছে বলে সংসদে জানান হারুন। তিনি বলেন, আজকে টিসিবির পণ্য প্রায় ১ কোটি পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে এবং ন্যায্যমূল্যে দেওয়া হচ্ছে। সব থেকে বেশি উদ্বেগের যেটা হলো—সব জেলা ও উপজেলায় টিসিবির ডিলার রয়েছে কিন্তু এখন গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র ও প্রশাসন যন্ত্র প্যাকেজিংয়ের কাজে লিপ্ত হয়ে গেছে। প্রশাসনের কাছে জনগণ সেবা পাচ্ছে না। গত একমাস যাবত তারা প্যাকেট করছে তেল, ডাল ও চিনি দুই কেজি করে, গরিব মানুষকে এই প্যাকেজ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। একজন রিকশাওয়ালা ও দিনমজুরের ছোলা ও খেজুরের প্রয়োজন নাই। ওই পণ্যগুলোর মধ্যে তার হয়তো পেঁয়াজ ও তেল দরকার কিন্তু এখন গোটা পণ্যগুলো নিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, কোনও অবস্থাতেই সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। বাম জোটের হরতালে পুলিশের লাঠিচার্জের কথা ইঙ্গিত করে হারুন বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে যারা কথা বলতে চেষ্টা করছে, তাদের পুলিশ দিয়ে দমন করা হচ্ছে। এইভাবে তো চলতে পারে না। মানুষের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ায় গোটা দেশের স্কুল, কলেজ ও রাস্তাঘাট নির্মাণ স্থবির হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেন হারুন। নিত্য পণ্যের জন্য টিসিবির মাধ্যমে সমন্বয় হচ্ছে। কিন্তু নির্মাণ কাজ কিসের মাধ্যমে সমন্বয় করবেন?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২তম ব্যাচের র্যাগ ডে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও ও একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের কথা উল্লেখ করে হারুন বলেন, আমাদের সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছি যা ইচ্ছা তা করার জন্য নয়। সেখানকার শিক্ষার্থীরা বলছেন, মদ, গাঁজা ও হিরোইন বিক্রি হয় দেদারসে। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি করছে? ভাইরাল হওয়া ভিডিও আমিও দেখেছি, মনে হচ্ছে হলিউড, না হয় বলিউডের কোন দৃশ্য। বাংলাদেশে যা ইচ্ছা তাই চলতে পারে না বলেন এমপি হারুন।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।