বিয়ে করতে যাচ্ছেন?তাহলে আরেকবার ভাবুন,খুব ঠাণ্ডা মাথায় সবকিছু আরেকবার খতিয়ে দেখুন। কেননা আপনি হতে পারেন প্রতারণার শিকার! দুঃখজনক হলেও সত্যি যে বিয়ের ক্ষেত্রে আমাদের সমাজে নানান রকম প্রতারণার ঘটনা ঘটে থাকে। কেবল অ্যারেঞ্জ ম্যারেজে নয়,প্রেমের বিয়েতেও ঘটে এসব ঘটনা। প্রায়ই দেখা যায় পাত্র/পাত্রী পক্ষ কিংবা ঘটক নানান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গোপন করে বিয়েটা করিয়ে দিচ্ছে। তাই বিয়ে করার সময় অবশ্যই খতিয়ে দেখুন এই উল্লেখিত ৬টি ব্যাপার।
পাত্র বা পাত্রীর কর্মক্ষেত্রে খোঁজ নিন, তার উপার্জনের উত্স সম্পর্কে নিশ্চিত হোন। তিনি কোনো অবৈধ কাজের সাথে জড়িত আছেন কিনা বা তার আয়ের উত্স যথাযথ কিনা সে ব্যাপারে খোঁজখবর করুন। অনেক সময় ছেলে কম বেতন পেলে তা বাড়িয়ে বলা হয়, আবার কর্মক্ষেত্রে পদমর্যাদা ছোট হলে তাও গোপন করা হয় বা বাড়িয়ে বলা হয়। একই ব্যাপার ঘটতে পারে মেয়ের ক্ষেত্রেও। তাই এসব ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিয়ে তবেই বিয়ের কথা আগে বাড়ান।
কনেপক্ষে মেয়ের এবং পাত্রপক্ষ ছেলের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়েছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হোন। কারণ এমন ঘটনা হরহামেশাই দেখা যায় যে, শিক্ষাগত যোগ্যতার ব্যাপারে তথ্য গোপন করে যায় অনেকে। এইচএসসি পাশ ছেলে বা মেয়েকে চালানো হয় অনার্স পাশ হিসেবে। তাই এ ব্যাপারেও খোঁজখবর করুন।
যদিও আমাদের সমাজে এর তেমন প্রচলন নেই, তবুও ডাক্তারি পরীক্ষা করা খুব জরুরি একটা ব্যাপার। ছেলে বা মেয়ের এইডস, হেপাটাইটিস বা যৌন কোনো রোগ আছে কিনা যা তার সঙ্গীকেও আক্রান্ত করতে পারে, তা জানা খুবই দরকার। কারণ এটা পুরো জীবনকে বরবাদ করে দিতে পারে। আমাদের সমাজে অনেক ছেলেই বিয়ের আগে যৌন কর্মীদের কাছে যাতায়াত করে থাকে। মেয়েরা যৌন কর্মীদের কাছে যাওয়ার সুযোগ না থাকলেও ড্রাগের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে ছেলেদের মতই, কিংবা অসুস্থ পুরুষ সঙ্গীর সংস্পর্শেও এসে থাকতে পারে। ফলে রক্ত বাহিত নানান রকমের রোগ সংক্রমণের আশংকা থেকেই যায়। তাই বিয়ের আগে অবশ্যই ডাক্তারি পরীক্ষা করান।
বিয়ে দুটি মানুষের সাথে সাথে দুটি পরিবারের মাঝেও হয়। দুটি পরিবারের মাঝে বন্ধনের সৃষ্টি হয় দুটি মানুষের বিয়ের মাধ্যমে। তাই কনে বা পাত্রের পরিবার ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারে খোঁজখবর করা জরুরি। যেমন বাবা-মা কেমন, ভাইবোন কী করে, আত্মীয়স্বজন কেমন ইত্যাদি। বিশেষ করে যৌথ পরিবারে বিয়ে করলে এসব অবশ্যই জানতে হবে। কারণ এই পরিবারের সাথেই আপনাকে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে সারাজীবন। তাই পারিবারিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জেনে তবেই বিয়ের দিকে এগোন।
পারিবারিক প্রেক্ষাপটের মতো পারিবারিক মেডিকেল হিস্ট্রি জানাটাও খুবই জরুরি। কারণ বিশেষ কিছু রোগ বংশগতির মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মে বিস্তার করে।
যেমন অটিজম, মস্তিষ্ক বিকৃতি, হাঁপানির মতো রোগ। তাই পরিবারে কেউ উন্মাদ ছিল কিনা বা এমন কোনো ব্যাপার ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা করুন। কারণ এসব ব্যাপার আপনার জীবনেও প্রভাব ফেলবে। তাই খোঁজখবর করে পারিবারের মেডিকেল হিস্ট্রি সম্পর্কে নিশ্চিত হোন।
যার সাথে আপনার বিয়ে হবে তার সাথে নিজের ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা সম্পর্কে খোলাখুলি আলোচনা করুন। তার ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা কী সেটাও জানুন। এতে বিয়ের পরে সংসার, ক্যারিয়ার, পরস্পরের প্রতি সমঝোতা ইত্যাদি বিষয়ে সমস্যা কম হবে। এমনকি বাচ্চা কবে নিতে চান এ ব্যাপারেও কথা বলুন। নয়তো পরে দেখা যাবে আপনি ক্যারিয়ার গড়তে চান আর আপনার সঙ্গী বাচ্চা নিতে চায় যা হয়তো সেসময় আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়াও আপনারা বিয়ের পর যৌথ পরিবারে থাকবেন নাকি আলাদা থাকবেন, তাও বিয়ের আগে আলোচনা করে নিশ্চিত হয়ে নিন।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।