নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে ডাইলপট্টি এলাকায় মা ও অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে বাসায় ঢুকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার যুবক আল জোবায়েরের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূর মহসিনের আদালতে তাকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত শুনানি শেষে তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, জানতে জোবায়েরকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে নিহত রুমা চক্রবর্তীর স্বামী রামপ্রসাদ চক্রবর্তী বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় আল জোবায়েরকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করতেই তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা স্বীকার করেছে আসামি জুবায়ের।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে ডাইলপট্টি এলাকার একটি বহুতল ভবনের ষষ্ঠ তলার ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ঘাতক জোবায়েরকে ছুরিসহ আটক করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন রুমা চক্রবর্তী (৪৫) ও রিতু চক্রবর্তী (২২)। রিতু চক্রবর্তী সাড়ে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার বাবা রাম প্রসাদ চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, বাড়ির সামনে পুলিশ ও এলাকাবাসীর জটলা দেখে স্ত্রীর (নিহত রুমা চক্রবর্তী) ফোনে ৩-৪ বার ফোন দিলে অপরপ্রান্ত থেকে ঘাতক জোবায়ের টাকা ও স্বর্ণালংকার কোথায় আছে তা জানতে চাচ্ছিল। টাকা ও স্বর্ণালংকার দিলে খুন করবে না বলেও হুমকি দেয় সে।
১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকেই বাঙালির ধারাবাহিক স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়
রাম প্রসাদ চক্রবর্তী আরো জানান, ‘আমি বলেছিলাম তোমাকে টাকা দেব ওদের মেরো না। কিন্তু এর আগেই মনে হয় যা ঘটার ঘটে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারও শত্রুতা নেই বা ছিল না। কেন এ হত্যার ঘটনা সে ব্যপারে আমি কিছু জানি না। তিনি জানান, আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে হৃদয় চক্রবর্তী কয়েক মাস আগে মুসলিম হয়েছে এবং ফারজানা নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেছে।
আমরা প্রথমে বিষয়টি মেনে নেইনি কিন্তু পরে মেনে নিয়েছি। গত কয়েকদিন থেকে পুত্রবধূ ফারজানা এই ফ্ল্যাটেই থাকছে। রাম প্রসাদ জানান, আমার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা থাকায় সে আমার বাড়িতে এসেছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহ জামান জানান, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে জোবায়েরকে আটক করি। নিহতদের শরীরে ছুরির আঘাতের অনেক চিহ্ন রয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা রিতুর শরীরের ৩টি স্থানে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আর রুমা চক্রবর্তীর পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওসি জানান, ডাকাতির উদ্দেশ্যেই জোবায়ের সেখানে গিয়েছিল। তার বাবা আলাউদ্দিন মিয়া একজন ব্যবসায়ী এবং আমাদের জানিয়েছে তার ছেলের মানসিক সমস্যা রয়েছে।