নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে ১০ ব্যক্তির নাম চূড়ান্ত করেছে সার্চ কমিটি। সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে মঙ্গলবার বিকালে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করা হয়। রাত সোয়া ৮টায় এ বৈঠক শেষ হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বৈঠকে সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করেছে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি এই ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করা হবে।
কমিটির প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির বাকি পাঁচ সদস্য বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন, লেখক-অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক, মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী এবং সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন অংশ নেন।
ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে গঠিত সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে দেশের সব রাজনৈতিক দল। ব্যক্তি এবং পেশাজীবীদের মধ্যেও এ নিয়ে কৌতূহল বাড়ছে।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, রোববারের বৈঠকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা ২০ জনের যাবতীয় তথ্য পর্যালোচনার পর ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করা হয়। ওই ১০ জনের বিষয়ে যে কোনো ধরনের বিতর্ক এড়াতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এবং মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আরও খোঁজ-খবর নেওয়া হয়। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ১০ জনের নাম মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। এই ১০ জনের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) পদে দুইজন এবং নির্বাচন কমিশনার পদে আটজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এই তালিকা থেকেই একজনকে সিইসি এবং চারজনকে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। এই ইসির অধীনেই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন।
সূত্র আরও জানায়, সিইসি পদে এবার বিচার বিভাগের কারও না আসার সম্ভাবনাই বেশি। কয়েকজন সাবেক সচিব ও একটি বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা প্রাথমিকভাবে সিইসি পদে আলোচনায় রয়েছেন। নির্বাচন কমিশনার পদে অবসরপ্রাপ্ত আমলা, বিচারক, নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কেউ থাকতে পারেন। তালিকা চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দায়িত্ব গ্রহণে সম্মত কিনা, সে বিষয়েও তাদের মতামত নেওয়া হবে।
এদিকে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর আগে প্রস্তাবিত ১০ জনের নাম জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে কিনা তা নিয়ে সার্চ কমিটির শনিবারের বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে মিশ্র মত থাকলেও অধিকাংশ মনে করেন, আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের (সার্চ কমিটি) তালিকা পাঠাতে হবে। এই তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশের প্রয়োজন হলে সেই বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত দেবেন। প্রয়োজন হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সেটি করবে।
তবে রাষ্ট্রপতির কাছে তালিকা পাঠানোর আগে তা জনসমক্ষে প্রকাশের জন্য দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনসহ কয়েকটি বেসরকারি সংগঠন। তাদের দাবি, তালিকা প্রকাশ হলে সাধারণ মানুষ সার্চ কমিটির তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের অতীত ও বর্তমান কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা সুযোগ পাবে। নিয়োগের পর এ নিয়ে বিতর্কের সুযোগ থাকবে না।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।