ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক হল শাখা ছাত্রলীগের সমন্বিত হলে সম্মেলন আজ। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে চার বছর পর নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের আবাসিক হল ইউনিট। সম্মেলনকে ঘিরে এরই মধ্যে চলছে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের দৌড়ঝাঁপ। অন্যবারের তুলনায় এবার বেড়েছে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীর সংখ্যা।
পদ পেতে এ বছর ১৮ আবাসিক হল ইউনিটে ৩৬ পদের বিপরীতে ৩২৫ জন পদপ্রত্যাশী জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ আবাসিক হল শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন হয় ২০১৬ সালে। এক বছর মেয়াদি এই কমিটি শেষ হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। তবে চার বছর পার হলেও নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করতে পারেনি সংগঠনটি। ফলে এক ধরনের স্থবিরতা চলছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে।
দীর্ঘদিন পর নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় উৎসবের আমেজ লেগেছে ইউনিটগুলোয়। হলগুলোতে সাঁটানো হয়েছে সম্মেলনের বড় বড় ব্যানার। জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকায় সাজানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সম্মেলনের পর এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন কমিটি ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দপ্তর সূত্র জানায়, সব মিলিয়ে ১৮ হলে এ বছর ৩২৫ প্রার্থী জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ২৮, শহীদুল্লাহ হলে ২৩, ফজলুল হক হলে ৩১, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ২৩, জগন্নাথ হলে ১৪, অমর একুশে হলে ১২, মুহসীন হলে ১৬, সূর্য সেন হলে ২৪, বঙ্গবন্ধু হলে ২৮, জসীমউদ্দীন হলে ১৯, জিয়া হলে ১০, স্যার এ এফ রহমান হলে ২৮, বিজয় একাত্তর হলে ২৩ পদপ্রত্যাশী জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের হলগুলোয় কম প্রার্থী হয়েছেন। মেয়েদের হলগুলোর মধ্যে রোকেয়া হলে সর্বোচ্চ ১২ জন প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলে ১১, শামসুন্নাহার হলে ছয়, কবি সুফিয়া কামাল হলে চার, কুয়েত মৈত্রী হলে ৯ জন পদ পেতে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, নতুন নেতৃত্বে আসতে ছাত্রলীগের শীর্ষ চার নেতার পাশাপাশি দায়িত্বপ্রাপ্ত চার আওয়ামী লীগ নেতা, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, সংসদ সদস্যদের কাছে লবিং-তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন পদপ্রত্যাশীরা। ধানমণ্ডিতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে নিয়মিত ধরনা দেওয়ার পাশাপাশি নেতাদের বাসায়ও যাচ্ছেন কেউ কেউ। বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের মারধর, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং অছাত্ররাও রয়েছেন নেতৃত্ব নির্বাচনে আলোচনার তালিকায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ স্বাধীনভাবে সংগঠন পরিচালনা করে। আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁদের কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করেন না। একই সঙ্গে যাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ, মামলা, অনৈতিক ও সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে তাঁরা হল নেতৃত্বে আসতে পারবেন না। ’
ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ইউনিটের নেতা নির্বাচন কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে। সম্মেলন শেষে ১৮ হল নিয়ে ভাগাভাগিতে বসেন নেতারা। সেখানে কে কোন হলে নেতা বানাতে পারবেন সেই বিষয়ে সমঝোতা হলে আনুগত্য বিবেচনায় নেতার পছন্দের প্রার্থীকেই নেতা বানানো হয়। তবে এ বছর কী প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচন করা হবে সেটি স্পষ্ট নয়।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।