প্রতি পাঁচ বছরে নির্বাচন আয়োজনের পদ্ধতি কঠোরভাবে অনুসরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধনী) আইন, ২০২১ এর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন। মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষ থেকেই এতে যোগ দেন।
বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, দেখা গেছে যে- মেয়াদের শেষের দিকে, কোন কোন চেয়ারম্যান আদালতে যান এবং পরবর্তী নির্বাচন আয়োজনে বিঘœ সৃষ্টি করেন।
তিনি আরো বলেন, আর এভাবেই কিছু চেয়ারম্যান পাঁচ বছরের বেশি, এমনকি ১৫-১৬ বছর পর্যন্ত তাদের পদে বহাল থাকেন। বিদ্যমান আইনের সুযোগ নিয়েই তারা এমনটি করেন। আর এভাবেই পরবর্তী নির্বাচন আয়োজনের আগ পর্যন্ত তারা ওই পদে বহাল থাকেন। তিনি আরো বলেন, ‘এই অপচেষ্টা বন্ধ করতেই সরকার ২০১৯ আইনের এই সংশোধন করেছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রস্তাবিত আইনটি সম্পর্কে বলেন, পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হলে সরকার সরকারি চাকরীজীবীদের মধ্য থেকে বা প্রশাসনিক কাজে অভিজ্ঞ ও দক্ষ অন্য কোন যোগ্য ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, ‘নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসক সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্য এই পদে বহাল থাকতে পারবেন এবং এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন হতে হবে।’
সভায় নতুন কোন পৌরসভার জন্য তালিকাভুক্ত হতে হলে ওই এলাকার প্রতি কিলোমিটারে ন্যূনতম ২ হাজার জনগণ থাকতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমান আইনে প্রতি কিলোমিটারে ন্যূনতম ১ হাজার ৫০০ জনগণ থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সভায় পৌরসভা সচিবের নাম পরিবর্তন করে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে- প্রস্তাবিত আইনে আরেকটি শর্ত অর্ন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। যাতে বলা হয়, কোন পৌরসভা তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১২ মাস বেতন বা অন্য কোন ভাতা প্রদানে ব্যর্থ হলে, সরকার সেই পৌরসভার মর্যাদা বাতিল করতে পারবে।
এছাড়াও মন্ত্রিসভায় এসেনশিয়াল সার্ভিসেস মেইন্টেনেন্স অ্যাক্ট, ১৯৫২ ও দি এসেনশিয়াল সার্ভিসেস (সেকেন্ড অর্ডিন্যান্স), ১৯৫৮ এর মাঝে সমন্বয় করে এসেনশিয়াল সার্ভিসেস অ্যাক্ট, ২০২১-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রস্তাবিত বিলটি পাশ হলে, সরকার প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন বিশেষ জরুরি সেবা প্রদান করতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, জরুরি সেবার মধ্যে পদ, টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট সার্ভিস, আইসিটি, ডিজিটাল সার্ভিস, মোবাইল আর্থিক সেবা, ডিজিটাল আর্থিক সেবা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ সংক্রান্ত সেবাসমূহ, রেলপথ, জলপথ, সড়কপথ ও আকাশপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সেবা অন্তর্ভূক্ত।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সরকার সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্য এই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবে।
এক্ষেত্রে জরুরি ঘোষণার পর সেখানে কোন ধরনের ধর্মঘট হলে তা শাস্তযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এই আইনের যে কোন ধরনের লংঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং যদি কোন শ্রমিক এই আইন লংঘন করে- তবে তাকে ২৫ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমান, ছয় মাসের কারাদ- অথবা উভয় দ-ে দ-িত করা হতে পারে।
মালিকের জন্য এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা, এক বছরের কারাদ- অথবা উভয় দ-ের বিধান রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনটিতে অবৈধ ধর্মঘটের জন্য চাকরীচ্যুতির বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়াও ছয় মাসের কারাদ-, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দ-ের বিধান রাখা হয়েছে।
পাশাপাশি, কেউ কোন ব্যক্তিকে আইন লংঘন করতে উস্কানি দিলে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমান, এক বছরের কারাদ- অথবা উভয় দ-ের বিধান রাখা হয়েছে।
মন্ত্রিসভায় চিটাগং ডিভিশন ডেভেলপ্টমেন্ট বোর্ড অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৬ (রিপিল) অ্যাক্ট,২০২১ এরও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটা আদালতের নির্দেশনায় বিদ্যমান আইনটির বিলুপ্তি ঘটাবে- যেখানে বলা হয়েছে, সামরিক শাসন আমলে করা সকল আইন বাতিল।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভায় দক্ষিণ সুদানসহ কয়েকটি আফ্রিকান দেশের কৃষি জমি লিজ নিয়ে কৃষিপণ্য উৎপাদনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে দ্রুত খোঁজ খবর নিয়ে সেখানে কৃষিপণ্য উৎপাদনের সুযোগ আছে কিনা তা জানতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশের কৃষিপণ্যের জন্য আরো বাজার খুঁজতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো বাংলাদেশের শাকসবজি নিতে আগ্রহী বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সরকার রপ্তানীর বাড়ানোর জন্য কৃষিপণ্যগুলো পরীক্ষা ও সনদ প্রদানের লক্ষ্যে একটি আন্তর্জাতিক-মানের পরীক্ষাগার নির্মাণ করতে পূর্বাচলে কৃষি মন্ত্রণালয়কে দুই একর জমি বরাদ্দ দিয়েছে।
সভায় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাস শুরুর বিলম্বের বিষয়েও আ
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।