প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবন-যাত্রার মানের বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে সরকার নানামুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
আগামীকাল ৪ অক্টোবর সোমবার ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নদী ভাঙনে বাস্তুচ্যুত অসহায় ও বস্তিবাসীসহ দেশের গৃহহীন-ভূমিহীনদের ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’ এর মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সংবিধানের ১৬ অনুচ্ছেদ এবং ১৮ক এর আলোকে নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবন যাত্রার মানের বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে আমাদের সরকার নানামুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছে। বাংলাদেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না, ইনশাল্লাহ।”
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা ৮ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে অনুশাসন দেয়া হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে সরকারি চাকুরিজীবীদের আবাসন সুবিধা ইতোমধ্যে ২৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। চলমান প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়িত হলে ২০২৩ সালে এ আবাসন সুবিধা ২৮ শতাংশে উন্নীত হবে। এ সকল বহুতল আবাসন প্রকল্পে জমির ন্যূনতম দুই তৃতীয়াংশ স্থান উন্মুক্ত রাখা অথবা জলাধারের সংস্থান এবং টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে নাগরিক জীবনে কার্বন নিঃসরণ বহুলাংশে কমে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘নগরীয় কর্মপন্থা প্রয়োগ করি কার্বনমুক্ত বিশ্ব গড়ি’ সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।”
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিকল্পিত নগরায়ন ও সকলের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তাঁর গৃহীত পরিকল্পনারই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি আবাসন প্রকল্পসমূহের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সবুজ এলাকার সমন্বয়ে বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রণীত ও প্রণয়নাধীন মহাপরিকল্পনাসমূহেও পরিবেশবান্ধব নগরায়নকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর জন্য প্রণয়নাধীন ভবিষ্যৎ মহাপরিকল্পনা- ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (২০১৬-৩৫) এ নগরীতে পরিকল্পিত বৃক্ষায়ন, টেকসই উন্নয়ন, দূষণরোধ, উন্নত প্রযুক্তিতে আবর্জনা প্রক্রিয়াকরণসহ বিভিন্ন পলিসি প্রদান করা হয়েছে, যা গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। এছাড়া বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব নির্মাণ-সামগ্রী প্রস্তুত ও এর বহুল ব্যবহার নিশ্চিতকরণের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, “সকলের সার্বিক সহযোগিতায় বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে কার্বন নিঃসরণমুক্ত উন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি। ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।”
তিনি ‘বিশ্ব বসতি দিবস-২০২১’ -এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।