প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, কেবল সাজা দিয়েই সমাজকে অপরাধ মুক্ত করা সম্ভব নয়। তাই যদি হতো তাহলে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আমাদের দেশে শতকরা আশি ভাগ মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন সাজা হচ্ছে। এতে স্ত্রী হত্যা কি কমেছে? কমেনি। প্রতিদিন সকালে পত্রিকায় স্ত্রী হত্যার খবর ছাপা হচ্ছে। একেকটি খবর দেখে মনে হয়, কেউ আমার মাথায় একটি বাড়ি (আঘাত) দিলো। প্রধান বিচারপতি বলেন, ফাঁসি সমাজকে রক্ষা করতে পারে না।
মঙ্গলবার আপিল বিভাগে ফাঁসির মামলা শুনানিকালে এ মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের কারণে সরকার ঘোষিত লকডাউনের মধ্যে সারা দেশে সকল আদালতে স্বাভাবিক বিচার কাজ বন্ধ থাকলেও আপিল বিভাগের বিচারপতিরা বাসায় বসেই ভার্চুয়ালি বিচার কাজ পরিচালনা করেন। এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনসহ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সকলেই নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করে বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ভারতের থেকে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি (ল’ অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন) কোনো অংশেই খারাপ না। বরং ভালো। কিন্তু ভারতে ২০১৯ সালে বিভিন্ন মামলায় মৃত্যুদণ্ড হয়েছে ১২১ জনের। আমাদের এখানে হয়েছে ৩২৭ জনের। আমাদের এখানে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর ফাঁসি বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হচ্ছে। কিন্তু ফাঁসি বা যাবজ্জীবনের এই সাজায় কি স্ত্রী হত্যা কমেছে? কমেনি। সুতরাং এটা ভুল ধারণা যে, সাজা দিলেই আমরা অপরাধ মুক্ত হয়ে যাবো। আমরা দুধের মধ্যে ভাসতে থাকবো। প্রধান বিচারপতি বলেন, স্ত্রী হত্যার দায়ে এতো ফাঁসি বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিচ্ছি। কিন্তু কাজ হচ্ছে না।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।