ইয়েমেনে ছয় বছর ধরে চলা যুদ্ধে দেশটির খাদ্য সঙ্কট কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে তার একটি নজির সামনে এসেছে। সাত বছরের শিশু ফাইদ শামিমের ওজন মাত্র সাত কেজি। ইয়েমেনের রাজধানী সানাতে একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তার। সে পঙ্গু এবং মারাত্মক অপুষ্টির শিকার। রয়টার্স।
আল সাবিন হাসপাতালের অপুষ্টি ওয়ার্ডে ফাইদের চিকিৎসক রাগেহ মোহাম্মদ বলেন, ‘মুমূর্ষু অবস্থায় ফাইদকে আনা হয়েছিল। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে আমরা তার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করতে পেরেছি। তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে।’চিকিৎসক রাগেহ মোহাম্মদ আরও বলেন, ফাইদ সেরিব্রাল পালসি ও অপুষ্টিতে ভুগছে।
হাসপাতালের কম্বলের চার ভাগের এক ভাগ জায়গাজুড়ে রয়েছে ফাইদের হাড়জিরজিরে শরীরটি। সানা থেকে ১৭০ কিলোমিটার উত্তরে আল জাওয়াফ এলাকা থেকে ফাইদকে নিয়ে এসেছে তার পরিবার। বেশ কয়েকটি তল্লাশিচৌকি ও ভাঙাচোরা রাস্তা পার হতে হয়েছে ফাইদকে।
ফাইদের চিকিৎসা করার সামর্থ্য ছিল না তার পরিবারের। ফাইদের পরিবার তার চিকিৎসার জন্য অনুদানের ওপর নির্ভর করেছে। ইয়েমেনের চিকিৎসক মোহাম্মদ বলেন, ইয়েমেনে অপুষ্টি বাড়ছে। দরিদ্র মা-বাবাকে সন্তানের চিকিৎসার জন্য অপরিচিতদের বা আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
ইয়েমেনে কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়নি। ছয় বছরের যুদ্ধে দেশটির ৮০ ভাগ জনগণ ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ বলেছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট চলছে ইয়েমেনে। ২০১৮ সালের শেষ দিকে জাতিসংঘ ইয়েমেনের দুর্ভিক্ষ নিয়ে সতর্ক করে। ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নানা বিধিনিষেধ, রেমিট্যান্স কমে যাওয়া, পঙ্গপালের হামলা, বন্যা ও অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে।
ইয়েমেনে ২০১৫ সাল থেকে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে ইরান–সমর্থিত হুতিদের যুদ্ধ চলেছে। এতে এক লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। ইয়েমেনও বিভক্ত হয়ে পড়েছে। হুতিরা সানা এবং বড় বড় শহরগুলো নিজেদের দখলে রেখেছে। তবে তেহরান সরাসরি হুতিদের সহায়তা করার বিষয়টি স্বীকার করে না।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।