আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকী। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীকে পরাজিত করে বিজয় অর্জন করে বাংলাদেশ। পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় নতুন এক স্বাধীন ভূখণ্ড।
১৯৫২ সালে বাংলাভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে যে লড়াইয়ের সূচনা হয়েছিল তা পূর্ণ বিকশিত হয়ে আলোর মুখ দেখে ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে। দীর্ঘকাল ধরে পাকিস্তানি শাষকগোষ্ঠীর শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করে পরাধীনতার শৃংখল ভেঙে জন্ম হয় লাল-সবুজের পতাকার।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পর সারা বাংলাদেশের মানুষ দেশ স্বাধীন করার ব্রত নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাক হানাদার বাহিনীর ওপর। দীর্ঘ সংগ্রামের পর ৯৩ হাজার দখলদার সৈন্য নিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে পাক হানাদার বাহিনী। জন্ম হয় স্বাধীন বাংলাদেশের। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত আর লাখো মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলার জমিনে উদয় হয় স্বাধীনতার লাল সূর্য।
জাতীয় জীবনে নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে এর অন্যতম প্রেরণা হলো মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতার চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে ৪৯ বছরে এসে এদেশের মাটিতে বিচার হয়েছে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা বাংলাদেশের স্বপ্ন বিনষ্ট করার চেষ্টা করেছিল সেইসব যুদ্ধাপরাধীদের। এদেশের প্রতিটি মানুষ বিশ্বাস করে দেশের সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার একদিন এই বাংলার মাটিতে কার্যকর হবে।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ১৬ ডিসেম্বর যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে দেশব্যাপী পালিত হবে। বিজয়ের প্রথম প্রহরে তোপধ্বনির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিজয় দিবসের নানা কর্মসূচি শুরু হবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শোভা পাবে জাতীয় পতাকা। বাংলার ঘরে ঘরে উড়বে লাল-সবুজের পতাকা। সূর্যোদয়ের পরপরই রাজধানীর অদূরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার শহীদদের অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতাসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও সর্বসাধারণ জনগণও শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
এবারের বিজয় দিবস বিভিন্ন কারণে স্পেশাল। কারণ একই সঙ্গে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন চলছে। আসন্ন বছর বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীও পালন করা হবে। তবে বিশ্বজুড়ে চলমান মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর বিজয় দিবসের অনেক অনুষ্ঠানই সীমিত করা হয়েছে। সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিজয় উদযাপন করার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।