কিন্তু আমরা এটাও জানি টেনশন করে কোন সমস্যার সমাধান করা যায় না। অনেকে আছে যারা বলে আমি টেনশন করতে চাই না, তারপর ও টেনশন চলে আসে। আজ আপনাদের টেনশন থেকে মুক্তি পাবার একটি উপায় বলব। আর সেটি হল এফমেশন। এফরমেশনের মাধ্যমে আপনি টেনশন থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কিন্তু শুরু করার আগে কিছু শর্ত আছে যেগুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে। তাহলেই আপনি এফরমেশনের ভালো ফলাফল পাবেন।
নিচের কথা গুলো মন থেকে প্রতিটি কথাকে বিশ্বাস করতে হবে এবং মনে করতে হবে এ গুলো একদিন সত্য হবে। রোজ এ কথা গুলো বলতে হবে অথবা যে যে কথা গুলো আপনার ভালো লাগবে সে গুলোকে লিখে রেখে রোজ সকালে বলবেন। আশা করি, আপনি সব শর্তে রাজি হবেন। কথাগুলো হল:
“আমি আমার জীবন নিয়ে খুব খুশি এবং সব সময় খুশি থাকব। আমার জীবনের প্রতিটি দিন অনেক সুন্দর। আগামী দিন গুলো আরও সুন্দর হবে। আমার চিন্তা , আমার ভাবনা , সব কিছু আমার হাতে থাকবে। আমার মাথায় সব সময় ভাল চিন্তাই আসে। আমি আমার অবসর সময় নিজের পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে থাকি। প্রকৃতি অনেক সুন্দর যেখান থেকে আমি অনেক নতুন নতুন কিছু শিখতে পারি। যখন আমি কোন সমস্যায় পড়ি তখন খুব সহজে সেটি আমি সমাধান করতে পারি। সব রকম খারাপ সময়ে আমি নিজেকে শান্ত রাখতে পারি। আমি আমার নিজের প্রতি সম্পূর্ন বিশ্বাস রাখি। প্রতিটি দিন আমার জীবন উন্নত হচ্ছে এবং আমি একটি সুন্দর জীবন উপভোগ করছি। আমি বিশ্বাস করি আমার সঙ্গে যা কিছু হয় সব কিছু আমার ভালোর জন্য হয়। আমার ঈশ্বরের প্রতি পূর্ন বিশ্বাস আছে। আগামীতেও সব কিছু ভালোই হবে। আমার ভবিষ্যতও খুব ভালো হবে। আমি নিজে অনেক খুশি , সারা জীবন আমার কাছে খুশি আসতে থাকবে। যে কোন সমস্যাকে আমি গভীর ভাবে দেখতে পারি। আমি যে কোন সমস্যার সমাধান করতে পারি। প্রতিটি দিন আমার কাছে একটি চ্যালেঞ্জের মতো। আর আমি যে কোন চ্যলেঞ্জ পূর্ন করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় পজেটিভ চিন্তা করি, আমি কখনো কোন কিছুতে পরাজয় স্বীকার করি না। আমি আমার রাগকে কন্ট্রোল করতে পারি। জীবনের যে কোন কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা আমার মধ্যে আছে।
আমি আমার জীবনের প্রতিটি সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে পারি। আমার জীবনে যা কিছু আছে সব কিছুই আমার জন্য সঠিক। যা আছে তা সবই আমার ভালোর জন্য আছে। আমার মধ্যে প্রচুর অর্থ রোজগার করার ক্ষমতা আছে। আমি আমার জীবন সব থেকে ভালো ভাবে তৈরি করতে পারব। আমি ভালোবাসা দেওয়া ও ভালোবাসা নেওয়াতে বিশ্বাস করি। আমি আমার অতীত থেকে অনেক কিছু শিখতে পারি। আমি একই ভূল বারবার করি না। আমি আমার কাছে পৃথিবীর সব থেকে ভালো মানুষ। আমি আমার জীবনের ভূল থেকে কিছু না কিছু নতুন করে শিখি। আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি। আমি যা কিছুই করি সবার থেকে অনেক ভালো করি। আমি সব সময় সঠিক সিন্ধান্ত নেই। আমি প্রতিটি মানুষকে সন্মান করি। আমি পৃথিবীর সব থেকে ভাগ্যবান মানুষ। আমি জীবনে যা কিছু চাই সেগুলোই আমি পেয়ে যাই”।
এই কথা গুলো রোজ সকালে ২১ দিন মনে মনে নিজের মুখে বলবেন। তাহলে ২২ দিন পর আপনার জীবন অন্য রকম হয়ে যাবে। অনেকে হয়ত ভাবছেন জীবন অত সহজ নয়। তাদের বলব, চেষ্টা তো করে দেখতে পারেন, চেষ্টা করতে দোষ কোথায়। রোজ মাত্র ৫ মিনিট ব্যয় করুন আপনার জীবন পরিবর্তন করার জন্য। এফরমেশন সম্বন্ধে সবাই জানেন, কিন্তু অনেকেই জানেন না সেটি কিভাবে করতে হয়। কাল সকাল থেকেই শুরু করবেন। শুধু মনে রাখবেন, আপনিই পৃথিবীর সেরা একজন মানুষ। দেখে নিন , মিরাক্কেল মিনিং বই থেকে আরও ৬ টি মনিং অভ্যাস। লেখক ৬ টি অভ্যাস মনে রাখার জন্য একটি ছোট ধারা তৈরি করেছেন। যাকে বলে S.A.V.E.R.S. । এর মধ্যে প্রথমটি হল সাইলেন্স। লেখকের কাছে সাইলেন্সের অর্থ হল প্রার্থনা। বেশির ভাগ মানুষ ঘুম থেকে উঠে সারা বিশ্বের চিন্তা করতে থাকে। কেউ খবরের কাগজ পড়ে আর কেউ ফেজবুক চেক করে। কিন্তু সফল মানুষেরা এটা করেন না। তারা সকালে ঘুম থেকে উঠে নিরব থাকেন। মানে তারা প্রার্থনা বা ইয়োগা টাইপের কিছু একটা করেন যা তাদের ব্রেইনকে শান্ত রাখে। নিজের সঙ্গে পজেটিভ কথা বলা। যা সফল মানুষ করে থাকেন। এই কাজটি আপনি আপনার জীবনেও করতে পারেন ৩ টি কথা বলে।
১। নিজেকে কেমন ভাবে দেখতে চান?
২। এই পরিবর্তন গুলো কেন চান?
৩। ওই সব কাজ করার জন্য কি কি করতে পারবেন? এ কথা গুলো একটি ছোট নোটে লিখুন আর প্রতিদিন সকালে নিজের জন্য পড়ুন।
ভিজুয়্যালাইজেশন: মনে করুন , আপনি বিসিএস পরিক্ষা দিবেন। প্রথমে ভাবতে হবে আপনি কিভাবে শুরু করবেন। আপনি অনেক রাত পর্যন্ত বই পড়বেন , নোট করবেন না কি গ্রুপ স্টাডি করবেন। এই সব ভাবনা ভিজুয়্যালাইজেশনের মাধ্যমে আপনি সঠিক ভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন।
অনুশীলন: আমরা সবাই জানি , ব্যায়াম খুব জরুরী। আমাদের মধ্যের বেশির ভাগ মানুষই এটি এড়িয়ে চলি। ব্যায়াম না করার অনেক কারন আছে। যেমন: দেরি করে ঘুম থেকে উঠলে আর অনুশীলন করা হয় না। তাই আপনাকে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করতে হবে। সকালে ব্যায়াম করলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ বেড়ে যায় , চিন্তা শক্তি বেরে যায় , শরীর ও মন ভালো অনুভব হয়।
পড়া: প্রতিদিন সকালে আপনি ১০ পৃষ্ঠা করে বই পড়বেন। এই হিসেবে আপনি এক বছরে ৩৬৫০ পৃষ্ঠা বই পড়ে ফেলবেন। যা প্রায় ১৭ – ১৮ টি বই এর সমান। এটি আপনার জীবনে অনেক পরিবর্তন এনে দিতে পারে।
লেখা: প্রতিদিন আপনি কয়েক মিনিট ব্যয় করুন আপনার চিন্তা ভাবনা লিখে রাখার জন্য। এ থেকে আপনি নতুন কিছু শিখতে পারবেন। যাকে মনিং পেইজ বলে।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।