শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এক অনুষ্ঠান উপলক্ষে ভার্চুয়ালি বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিশুরা যাতে আবার তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে আসতে পারে এবং তাদের শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পুনরায় শুরু করতে পারে সে জন্য সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
আজ মিরপুর সেনানিবাসের জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজে শেখ হাসিনা কমপ্লেক্স ডিএসসিএসসি-তে জাতীয় প্রতিরক্ষা কোর্স-২০২০ এবং সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধ কোর্স-২০২০ এর স্নাতক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি ভবিষ্যতে ভালো দিন আসতে পারে। আমাদের শিশুরা তাদের স্কুলে যেতে সক্ষম হবে, তারা স্বাভাবিকভাবে তাদের পড়াশোনা শুরু করবে। আমরা সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখনই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। সরকার কোভিড-১৯ এর জন্য স্কুল খুলতে পারছে না। অনলাইন ও টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিশুরা যদি তাদের স্কুলে যেতে না পারে তবে এটি তাদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করে।’
করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশনা অনুসরণ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের কথা জানান। তবে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হলে প্রতি উত্তর দিতেও সর্বদা প্রস্তুত থাকার ওপর জোর দেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। কিন্তু কেউ যদি আমাদের সার্বভৌমত্বকে আঘাত করতে আসে তাহলে অবশ্যই আমাদের পাল্টা আঘাত করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এর জন্য আমাদের প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যদের এটি সর্বদা মনে রাখা প্রয়োজন।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের ১০ লাখেরও বেশি নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে কখনো সংঘাতের পথে যায়নি। বিষয়টি সমাধান করার জন্য আমরা আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশ দ্রুত সকলকে এই সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে কারণ মিয়ানমারের এই নাগরিকরা দেশের জন্য একটি বড় বোঝা।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনী দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং বিশ্ব অঙ্গনে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় সর্বদা প্রস্তুত থাকবে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি।’
তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। কোভিড-১৯ মহামারিসহ দেশের সব সংকটে সশস্ত্র বাহিনীর কাজের প্রশংসা করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘লাখ লাখ মানুষের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। এই ত্যাগ অবশ্যই বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। এই স্বাধীনতা আমাদেরকে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যাবে।’
এ সময় ‘ভিশন-২০২১’, ‘ভিশন ২০৪১’ ও ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’সহ দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির কারণে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারলেও, বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশকে এখনো উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।’
অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজের কমান্ড্যান্ট লে. জেনারেল আতাউল হাকিম সরোয়ার হাসান বক্তব্য দেন।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।