সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা। তবে উপকার পেতে সঠিক পদ্ধতি মেনে খাওয়াদাওয়া করা জরুরি। তাতে সময় এবং পরিশ্রম কোনো কিছুই বিফলে যায় না। এমন কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো খালি পেটে খেতে পারলে বেশি উপকার পাবেন; সারা দিন শরীর থাকবে সুস্থ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার ঠিকঠাক না পেলে শরীর পুষ্ট হবে না। ফলে সেখান থেকে হতে পারে আরও নানা বিপত্তি। তাই সঠিক সময়ে সঠিক খাবার খাওয়ার পরামর্শ পুষ্টিবিদদের।
যেকোনো খাবার অনেকটাই নির্ভর করে সময়ের ওপর। রাতের খাবারের আর সকালের নাস্তার মধ্যে দীর্ঘ একটা সময়ের বিরতি থাকে। আর এই সময়ে ঠিকঠাক খাবার খাওয়া খুব জরুরি। কারণ খালি পেটে সঠিক খাবারই আমাদের সারা দিনের হজম ক্রিয়া ঠিক রাখে। বলা যায়, শরীর সুস্থ রাখার এটাই হলো চাবিকাঠি।
কিন্তু এটা জানেন কি শরীরকে সুস্থ রাখতে সকালে কোন কোন খাবার খাওয়া প্রয়োজন? ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এই সময়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী চলুন জেনে নেয়া যাক, সকালে খালি পেটে কোন খাবার কীভাবে খেলে সুস্থ থাকা যাবে।
প্রতিদিন সকালে উঠে হলকা গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেলে পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে বদহজম বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা মাথা তোলার সুযোগই পায় না। সেই সঙ্গে মধুতে উপস্থিত একাদিক পুষ্টিকর উপাদান অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
সকালে খালি পেটে পেঁপে খেলে অন্ত্র গতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সঠিক বিকল্প। পেঁপে খালি পেটে খেতে একটি সুপারফুড। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো পেঁপেটি সারা বছর বাজারে পাওয়া যায়। পেঁপেতে আছে ভিটামিন এ, সি, কে, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও প্রোটিন। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণ ফাইবারও রয়েছে। আর পেঁপেতে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম। সেই সঙ্গে স্বাদেও মিষ্টি। তাই সুগার রোগীদের প্রতিদিন একবাটি করে পাকা পেঁপে খেতে দেয়া হয়। এছাড়াও অনেকেই হজমের সমস্যায় ভোগেন। তাদেরও প্রতিদিন পাকা পেঁপে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
সকালের নাস্তায় কম ক্যালোরি এবং উচ্চ পুষ্টিকর খাবার খেতে চাইলে পোরিজ একটি দুর্দান্ত বিকল্প। বিশেষত ওটমিল থেকে তৈরি পোরিজ ব্রেকফাস্টের জন্য সুপারফুড। স্বাদে আশ্চর্যজনক হলেও শরীরের জন্যও স্বাস্থ্যকর। খালি পেটে পোরিজ খাওয়া শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয় এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যও সুস্থ রাখে। ওটমিল খাওয়া আপনার পেটকে দীর্ঘ সময় ধরে রাখে যাতে আপনি অতিরিক্ত খাবারও এড়াতে পারেন।
তরমুজ
সকালে ঘুম থেকে উঠে খাবারের তালিকায় তরমুজ রাখতে পারেন। ৯০ শতাংশ পানি নিয়ে গঠিত এই ফলটি শরীরকে হাইড্রেশনের একটি বিশাল অংশ সরবরাহ করে। এটি কেবল মিষ্টি খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা হ্রাস করে। আমরা এটি খেলে অতিরিক্ত ক্যালোরিও গ্রহণ করি না। তরমুজ ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ এবং এছাড়াও উচ্চ পরিমাণে যৌগিক লাইকোপিন রয়েছে, যা হৃদয় এবং চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
সকালের নাস্তায় একমুঠো বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যকর। এটি অন্ত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলো কেবল হজমে উন্নতি করে না, আপনার পেটের পিএইচ স্তরকেও স্বাভাবিক করে তোলে। প্রতিদিনের ডায়েটে কিশমিশ, বাদাম এবং পেস্তা অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এগুলো পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত। কারণ অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে মুগ্ধ এবং ওজন বাড়তে পারে। বাদাম পুষ্টির সঠিক ডোজ দেবে, যা আপনার মনকে তীক্ষ্ণ করার পাশাপাশি স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সহায়তা করবে।
খালি পেটে বাদাম খাওয়াও অনেক স্বাস্থ্য উপকার সরবরাহ করে। বাদামে ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন ই, প্রোটিন, ফাইবার, ওমেগা- ৩ এবং ওমেগা- ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। রাতে ভিজিয়ে রেখে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।