কর্মকর্তাদের উদ্দেশে পরিপত্রে বলা হয়, ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে নিশ্চয়তামূলক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী ভ্রাম্যমাণ ইউনিটগুলোকে নিবিড় টহলদানের ব্যবস্থা, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। আর ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর ভোটকেন্দ্রের অবস্থান সম্পর্কে নির্বাচনের পূর্বে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
নিরপেক্ষতা দৃশ্যমান করতে টিম গঠন
পরিপত্রে বলা হয়েছে, নির্বাচন অনুষ্ঠান যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় এবং ওই নিরপেক্ষতা যাতে জনগণের কাছে দৃশ্যমান হয় তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে ও মেট্রোপলিটন এলাকায় রিটার্নিং অফিসারদের নেতৃত্বে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করতে হবে।
অনুরূপভাবে উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করতে হবে। এই টিমে বেসরকারি পর্যায়ের দলনিরপেক্ষ বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে এই টিম গঠন করে টিমের সদস্যদের (মোবাইল নম্বরসহ) তালিকা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাতে হবে।
পরিপত্রে আরো বলা হয়, ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিমকে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে কি না অথবা ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না বা নির্বাচনী প্রচারণা ও নির্বাচনী ব্যয় বাবদ নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত ব্যয় করেছে কি না, অথবা অন্যান্য বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করছে কি না, তা সরেজমিনে পরিদর্শন করতে নির্দেশ দেবেন। আচরণবিধি ভঙ্গের কোনো বিষয় নজরে আসা মাত্রই নির্বাচনী তদন্ত কমিটিকে জানাতে হবে। অন্যান্য নির্বাচনী বিধি-নিষেধ ভঙ্গের ক্ষেত্রে মামলা দায়েরের ব্যবস্থা নিতে হবে এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে ফৌজদারি আদালতেও অভিযোগ করা যাবে।
প্রয়োজনে উদ্ভূত সমস্যাবলি তাত্ক্ষণিকভাবে নিরসনের পরামর্শ দেবেন। এ ছাড়া স্থানীয় পরিস্থিতির ওপর তিন দিন পর পর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিতে হবে। প্রার্থী বা তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট বা তাঁদের পক্ষে অন্য কেউ আচরণ বিধিমালার কোনো বিধি ভঙ্গ করলে বা ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে বা বিধিমালার কোনো বিধি বিশেষ করে নির্বাচনী ব্যয়সংক্রান্ত বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন না করলে তাত্ক্ষণিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে।
বৈধ প্রার্থীর মৃত্যু হলে ভোট বাতিল
পরিপত্রে বলা হয়েছে, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি এমন কোনো বৈধ প্রার্থী যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৯১ক ও ৯১ঙ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী যদি প্রার্থিতা বাতিল হয়, তবে অনুচ্ছেদ ১৭-এর দফা (১) অনুসারে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার নির্বাচন কার্যক্রম বাতিল করতে হবে। অতঃপর গৃহীত ব্যবস্থা তাত্ক্ষণিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে। কমিশন ওই নির্বাচনী এলাকার জন্য নতুন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নির্বাচন অনুষ্ঠানে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যাঁদের মনোনয়নপত্র আগে বৈধ হয়েছিল, তাঁদের নতুন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে না। এমনকি জামানতের অর্থও জমা দিতে হবে না।
পরিপত্রে আরো বলা হয়েছে, প্রতীক বরাদ্দের পরপরই প্রতীকের একটি নমুনা সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে সরবরাহ করবেন। কারণ তা তাঁর প্রচারণার জন্য প্রয়োজন হবে। নির্বাচন কমিশনের ওয়েব সাইটে প্রতীকগুলোর নমুনা পাওয়া যাবে। উল্লিখিত প্রতীকের নমুনাসংবলিত পোস্টার এরই মধ্যে মাঠ পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে।
ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করতে চিঠি
নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের নির্বাচনী প্রচারসামগ্রী অপসারণ করতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক-৬ শাখা। এর আগে গত ১৮ নভেম্বর ইসি নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান এসংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আইন ও বিধি অনুযায়ী সারা দেশ থেকে পোস্টার, ব্যানার, গেট, তোরণ ইত্যাদি প্রচারসামগ্রী অপসারণের জন্য পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।