আশিক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। রাজধানীর মৌচাক এলাকার ডক্টর গলিতে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। প্রতিদিন সকাল ৮টার মধ্যে তাকে অফিসে যেতে হয়। আবার বিকাল ৫টার মধ্যেই বাড়ি ফিরে আসেন। ঘূর্ণিঝড় মিধিলার প্রভাবে রাজধানীতে আজ শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আর তাতেই আশিকের বাসার সামনে হাঁটু পানি জমেছে।
আশিকের অভিযোগ, ‘একটু বৃষ্টি হলেই বাসার সামনে পানি জমে যায়। তখন অফিসে যাওয়া-আসা করতে ভীষণ অসুবিধা হয়। প্যান্ট গুটিয়ে, জুতা-স্যান্ডেল হাতে নিয়ে বেকায়দায় বাসায় যেতে হয়। এই দুর্ভোগের কোনো শেষ নেই?’
মৌচাক এলাকায় জলাবদ্ধতায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগের বিষয়টি তুলে ধরে মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ বিক্রেতা আরিফ বলেন, ‘অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় পানি জমে যায়। একদিন পর তা শুকিয়ে গেলেও কাদা থাকে। এতে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। মেয়র সাহেব, আপনি এখানকার জলাবদ্ধতা দূর করছেন না। কালকে যদি বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তার দায়ভার আপনি নেবেন তো?
সিদ্ধেশ্বরী কলেজের ছাত্রী স্বপ্না রহমান বলেন, ‘বৃষ্টি হলেই মৌচাকে পানি জমে যায়। আমার মনে হয়, কর্তৃপক্ষের এদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। দ্রুত জলাবদ্ধতা দূর করা উচিত।’
রাজধানীর মৌচাক এলাকায় আরও অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তারা প্রায় একই অভিযোগ করেছেন। তাদের ভাষ্য, এই এলাকায় জলাবদ্ধতা নতুন নয়। অনেকবার হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এলাকাবাসী বৃষ্টির সময় ভোগান্তিতে পড়ছেন। এই জলাবদ্ধতা দূর হওয়া দরকার।
একজন রিকশাচালক, মোজাফফরের সঙ্গে কথা হতেই তিনি মেয়র দিকে ছুড়ে দিলেন জলাবদ্ধতা সংশ্লিষ্ট প্রশ্ন। তিনি বলেন, ‘তারা কি ঘুমায় থাকেন? তারা কি দেখেন না- আমাদের কষ্ট? প্রতিদিন রিকশা চালায় আমাদের কষ্ট করে রোজগার করতে হয়। তার ওপর যদি একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়, তাহলে আমরা যাবো কোথায়?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামিউল আলমও একই কথা বললেন, ‘মেয়র সাহেবের আসলে এই দিকটা ভেবে দেখা উচিত। আমরা তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছি। আর তিনি এভাবে জলাবদ্ধতার বিষয়ে উদাসীন থাকতে পারেন না। বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যায়। এতে ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগ বিস্তারের ঝুঁকিও থাকে। বৃষ্টিতে আমরা কীভাবে যাতায়াত করবো?’
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল বাশার বলেন, ‘নিচু এলাকা হওয়ার দরুণ পানি জমে যাচ্ছে। দেশ টিভির সামনে (মৌচাক মোড়) থেকে মালিবাগ রেলগেট পর্যন্ত এলাকার রাস্তা উঁচু। আমাদের প্ল্যান আছে, আগামী অর্থবছর আমরা মালিবাগ রেলগেট থেকে মৌচাক মোড় পর্যন্ত নতুন করে রাস্তা নির্মাণ করবো। তখন আশা করি, এ সমস্যা আর থাকবে না।’
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।