আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের অংশ হিসেবে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে সফরের জন্য শ্রীলংকা ক্রিকেট বোর্ডের (এসএলসি) বেঁধে দেয়া শর্তাবলী মেনে নেয়া অসম্ভব বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
আজ পরিচালনা পর্ষদ ও অন্যান্য উচ্চ-কর্মকর্তাদের নিয়ে হওয়া এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে এসএলসিকে নিজেদের সিদ্বান্ত জানিয়ে দিয়েছে বিসিবি।
তবে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, এসএলসি যে শর্তাবলী দিয়েছে তা বিরল এবং শ্রীলংকা যদি এই শর্তে অটুট থাকে তবে সফর করা সম্ভব নয়।
সমস্যাটি হল শ্রীলংকা সফরে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে এবং সেই সময় কঠোর প্রটোকল মেনে হোটেলের মধ্যে বন্দি থাকতে হবে তাদের। তাই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকলে, সিরিজের জন্য প্রস্তুতি নেয়া কঠেন হয়ে যাবে। কোভিড-১৯এর প্রার্দুভাবের পর থেকেই বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা ক্রিকেট থেকে দূরে আছেন।
প্রাথমিকভাবে বিসিবি জানিয়েছিলো, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর শ্রীলংকায় পৌঁছে সাতদিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে চায় এবং পরের দিন থেকে অনুশীলনে নামতে চায়। সম্ভাব্য সুচি অনুযায়ী ২৩ অক্টোবর থেকে সিরিজ শুরু হওয়ার কথা চিল।
এসএলসি-র নতুন শর্তে দেখা গেছে, বাংলাদেশ দলটি কোচিং স্টাফসহ ৩০জন সদস্যের বেশি হত পারবে না। দলের সদস্য সংখ্যা বেশি হবার কারন- বিসিবির পরিকল্পনায় ছিলো জাতীয় দলের সাথে হাই পারফরমেন্স দলের শ্রীলংকা সফরের। যা শ্রীলংকাকে সমস্যায় ফেলে দিয়েছিলো।
পরিচালকদের সাথে বৈঠক শেষে আজ সংবাদ মাধ্যমকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘আমাদের কাছে অনেক শর্তই নতুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব দেশগুলোতে ক্রিকেট ফিরেছে আমি তাদের সাথে কথা বলেছি। বেশিরভাগ দলই সাত দিনের কোয়ারেন্টাইন করেছে এবং সেখানে সফরকারী দলকে অনুশীলনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিছু জায়গায় সফরকারী দলকে তিন দিনের কোয়ারেন্টাইনের পরে মাঠে নামার অনুমতিও দেয়া হয়েছে। কিন্তু গতকাল এসএলসি দেয়া শর্তে বলা হয়েছে, আমাদের দলের সদস্যদের ১৪ দিনের আগে ঘর থেকে বের হতে দেয়া হবে না। এমনকি খাবারের জন্যও নয়।’
পাপন বলেন, ‘আমি জানি না, আসলে কারনটি কি, তবে এর পেছনে কিছু কারন রয়েছে। আমি জানতাম শ্রীলংকা এমন একটি দেশ, যারা কোভিড-১৯ সমস্যাটি সফলভাবে মোকাবেলা হয়েছে এবং এজন্যই আমরা সেখানে ভ্রমণ করতে সম্মত হয়েছি। এখন আমাদের মনে হচ্ছে, তারা কোভিড-১৯ নিয়ে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে যা আমরা জানি না। তারা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছে, কিন্তু যখন আমাদের সময় এলো, তখন তারা বিধিনিষেধ আরোপ করছে।’
শ্রীলংকার দেয়া শর্তাবলী ও অন্যান্য বিষয় প্রকাশ করে বিসিবি সভাপতি তিনি জানান এটি গ্রহণ করা সহজ নয়।
বিসিবি বস বলেন, ‘প্রথমদিকে আমাদের দলটি কলম্বোতে নয় ডাম্বুলায় থাকবে। তারপরও তারা আমাদের সদস্যদের ঘর থেকে বের হতে দিবে না। এসব শর্ত অবাক করে। অনুশীলনের সুবিধার কথা বলতে গেলে, তারা আমাদের নেট বোলারও দিবে না এবং একই সাথে তারা আমাদের সাথেকাউকে বহন করতে দিবে না। এটি বাচ্চাদের খেলা নয়, এটি আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ।আমাদের ভাবনার মধ্যে তাদের ভাবনার অনেক বেশি র্থক্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের শর্তাবলী, আসলেই বিরল। এমন শর্তে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ খেলা সম্ভব নয়।’
অস্থায়ী সূচি অনুযায়ী, সিরিজে প্রথম দু’টি টেস্ট ক্যান্ডিতে এবং শেষটি কলম্বোতে খেলার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত যদি সিরিজ বাতিল হয়ে গেলেও এই মুহুর্তে তার পরিবর্তে কিছু ভেবে রাখেনি বিসিবি।
পাপন বলেন, ‘লংকান বোর্ডকে সবকিছু অবগত করা হয়েছে। আশা করছি, খুব শীঘ্রই আমরা উত্তর পেয়ে যাবো। তবে আমরা এখনো ঐ সিরিজের পরিবর্তে কিছু ভেবে রাখিনি। একটি কাজ আমরা করতে চাই, ক্রিকেটকে মাঠে ফেরাতে চাই। নিশ্চিত নই, কোনও আন্তর্জাতিক দল আমাদের সাথে খেলবে কি-না। তবে আমাদের লক্ষ্য, শীঘ্রই ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করা। এটি এখনো পরিকল্পনা করা হয়নি, তবে আমরা খুব দ্রুত ক্রিকেট ফেরাবো। কোচিং স্টাফরা এখানেই থাকবে, ক্রিকেটাররা দীর্ঘদিন যাবত খেলছে না, তাই এখন আমরা কিছু পরিকল্পনা করবো।’
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।