বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকার গোটা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে তুলেছে। ফলে এই সরকারকে সরানো ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা নেই। এই সরকারের কাছ থেকে মুক্তি পেতে হলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া গত্যান্তর নেই। সেই নির্বাচনে জনগণ যাদের চান তারাই ক্ষমতায় আসবে।’

শনিবার জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংগঠনের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হকের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদারের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরফত আলী সপু, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, ওলামা দলের মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজা, মাওলানা আলমগীর হোসেন প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘জিয়াউর রহমান দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে সম্মান দেওয়ার জন্য সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এবং আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ স্থাপন সংযোজন করেন। বাংলাদেশের মানুষ হচ্ছে ধর্মভীরু।আজ আমাদের দুঃখ হয়। শুধু ইসলামের পক্ষে থাকার কারণে অনেক আলেম ওলামাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসব কথা কিন্তু আমরা ভুলে যাইনি। আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীন মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা ও পাঠাগার তৈরি করেছিলাম। মন্দিরেও পাঠাগার নির্মাণ করা হয়েছিল।কওমি মাদ্রাসার জন্য অনেক কাজ করেছে দাবি করে সরকার বাহবা নিচ্ছে। তারা নাকি কওমি মাদরাসার দাওরা শিক্ষাকে মাস্টার্সের সমমান দিয়েছে। কিন্তু এই কাজটা বিএনপির আমলে প্রায় শেষ হয়ে যায়। আজ আলেম-উলামাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সরকার সেই কাজটি ভালোভাবে করে। তারা গোটা দেশটাকে বিপন্ন করে ফেলেছে। একজন মহিলা ফেসবুকে পোস্ট করায় রাতের বেলা তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। দেশের মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই।’’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ছাত্রলীগের হাতে নির্মম নির্যাতনে নিহত আবরারের স্মরণে কর্মসূচি পালন করতে গিয়েছিল ছাত্ররা। ছাত্রলীগ তাদের মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের পিটিয়েছে। চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা দিয়েছে। তারা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখলে নিয়েছে। বিদ্যুৎ নেই, এটাই এই সরকারের আসল চেহারা।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে বিদ্যুৎ নেই, এটাই এই সরকারের আসল চেহারা। বিদ্যুতের কথা বলে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প তৈরির নামে অর্থ চুরি ও বিদেশে পাচার করা হয়েছে। কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে যে পরিমাণ টাকা সরকার লুট করেছে,তা দিয়ে এক বছরের বাজেট হয়ে যেত। আইসিটি বিভাগ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ধারা ১৫-এর ক্ষমতাবলে সম্প্রতি যে ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে ঘোষণা করছে, তারও কঠোর সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আগে সংবাদপত্র বিভিন্ন দপ্তরে যে চুরি হচ্ছে, সেগুলো তুলে ধরতেন। এখন তারা সেগুলোও লিখতে পারবে না।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ প্রতিটি থানায় বিএনপির নেতা ও অর্থ জোগানদাতাদের তালিকা করা নির্দেশ দিয়েছে। বিরোধী দল যাতে কোনো কাজ করতে না পারে, সে জন্য এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তাদের ওপর দমনপীড়ন করা হবে।’