মায়ানমারের উস্কানী প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, মায়ানমারের বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে এবং সংযম হয়ে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের যেখানে যাকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেয়া দরকার যথাযথ ব্যক্তিদের যথাস্থানে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমাদের পরিস্কার কথা আমরা যুদ্ধ চাই না শান্তি চাই। সেভাবে প্রশাসন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব সবাই প্রস্তুত আছে।
মন্ত্রী এ বিষয়ে আরো বলেন, তবে আমরা আক্রমনকারী হিসেবে চিহিৃত হবো না। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে উভয় পক্ষ আলাপ আলোচনার টেবিলে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান করতে চাই। প্রয়োজনে বিষয়টা আমরা জাতিসংঘে নিয়ে যাবো। প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল ২৩ সেপ্টেম্বর এ ব্যাপারে জাতিসংঘে বক্তব্য দিবেন। সেখানে তিনি ব্যাপারটা উত্থাপন করবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।
মন্ত্রী আরো বলেন, এখন যুদ্ধ করার সময় না। ইউক্রেন যুদ্ধে সারা বিশ্বে জ্বালানী সংকট চলছে। গোটা বিশ্বে আজকে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। আমাদের এখানে বাধ্য হয়ে জ্বালানীর মূল্য বাড়াতে হয়েছে। বাধ্য হয়ে জিনিসপত্রে দাম বাড়াতে হয়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় দিন দিন বাড়ছে। কাজেই যুদ্ধটা আমাদের না। আরেকটা যুদ্ধ এখানে বাধাবো এটার দরকার নাই। আমি আশা করি শান্তিপূর্ণ সমাধানই আমাদের কাম্য। আমরা আশাকরি মায়ানমারও শান্তির পথে আসবে।
আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশ গ্রহন প্রসঙ্গে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচনের নামে মিথ্যাচার করছে। প্রতিদিনই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দিবাস্বপ্ন দেখছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদালত ফয়সালা করে দিয়েছে। এখানে আমাদের কোন এখতিয়ার নাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে মিউজিয়ামে চলে গেছে। ওটা আর ফিরে আসার সম্ভাবনা আপাতত নেই।
নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে এটা আমি আশ্বস্ত করতে চাই। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন হবে। আর এই সরকার মূল দায়িত্ব পালন করবে না। নির্বাচনকালিন সময়ে অন্যান্য গনতান্ত্রিক দেশের মতো এই সরকার রুটিন ওয়ার্ক পালন করবে। যারা নির্বাচনে দায়িত্বে থাকবে তারা সরকারের অধীনে থাকবে না। তারা নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ি চলবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরো বলেন, নির্বাচনের সময় পুলিশকে বদলী করতে হলে করবে নির্বাচন কমিশন। এগুলো বারবার বলার পরও তাঁরা বারবার বিষয়টি নিয়ে পানি ঘোলা করছে। তারা পানি ঘোলা করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। শেষ পযন্ত নির্বাচনে না এসে তাঁদের সামনে আর কোন পথ আছে বলে আমি মনে করি না।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনা পয়েন্টে মধুমতি নদীর উপর নির্মিত মধুমতি সেতু নির্মাণ ও উদ্বোধন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এই সেতু দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি। এই ব্রীজ শুধু নড়াইলবাসীর জন্য নয়, এই প্রতিশ্রুতি যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, খুলনাসহ গোটা অঞ্চল সুফল পাবে। ৬৯০ মিটার দীর্ঘ ৬ লেন বিশিষ্ট এ সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৬৫৯ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। আমরা যথা সময়ে কাজ শেষ করেছি। অক্টোবর মাসেই বহু প্রতিক্ষিত এ সেতুটি উদ্বোধন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা দিয়ে কথা রেখেছেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, এই সেতুর মাধ্যমে পদ্মাসেতুর সুফল গোটা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ভোগ করবেন। এই সেতুকে আর কালনা সেতু বলা যাবে না এই সেতুর নাম মধুমতি সেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর নামকরণ করেছেন মধুমতি সেতু। এই সরকারের আমলে সুদুর পাহাড়ে পর্যন্ত যেদিকে যান শুধু রাস্তা। ইতিহাসে এর কোন নজির নাই। যেখানে প্রয়োজন ৪ লেন ৬ লেন আমরা করেছি। আমরা পদ্মাসেতু করলাম, এর সুফল পেতে হলে রাস্তাও প্রশস্ত করতে হবে। সেটা আমরা জানি। আমাদের পরিকল্পনা আছে। পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ণ হবে।
এ সময় নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা, গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ হোসেন, মধুমতি সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুজ্জামান, কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেহেদী হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।