গত বেশ কিছুদিন ধরে চরম অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। ভয়াল বন্যায় ধুঁকছে পাকিস্তানও। মৃত্যর সংখ্যা সহস্রাধিক। নিখোঁজ অগণিত মানুষ। এই দুর্দশাকবলিত দুটি দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে তাদের ক্রিকেটারদের দিকে। ক্রিকেটই এই দুই দেশের মানুষের জেগে উঠার প্রেরণা। সব বাধা পেরিয়ে ফাইনালে উঠেছে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান। এমনি অবস্থায় রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপে শিরোপার লড়াইয়ে নামছে এই দুই দল।
এবারের এশিয়া কাপে সবচেয়ে ধারাবাহিক দল শ্রীলঙ্কা। সুপার ফোরে সবগুলো ম্যাচইে দোর্দণ্ড প্রতাপে জিতেছে তারা। খুব ভালোভাবে ফাইনালে উঠলেও সুপার ফোরের সর্বশেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটের ব্যবধানে হেরেছে আনপ্রেডিক্টেবল খ্যাত পাকিস্তান। ওই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১২১ রান তুলতেই দম ফুরিয়ে যায় তাদের।
এবারের আসরে আগে ব্যাট করাটা খুব বড় একটা পরীক্ষা। প্রায় সব ম্যাচেই আগে ব্যাট করা দল সুবিধা করতে পারছে না। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান এই দুই দলই চলতি আসরে আগে ব্যাট করে কোনো ম্যাচ জেতেনি। বলা বাহুল্য, সুপার ফোরের চারটি ম্যাচেই টস জিতে আগে ফিল্ডিং নিয়েছিল লঙ্কানরা। গ্রুপ পর্বে লঙ্কানদের একমাত্র হারটিও পরে ফিল্ডিং করে। পুরো আসরে দুটি ম্যাচ হেরেছে পাকিস্তান। বলা বাহুল্য ওই দুটি ম্যাচেই টসে হেরে আগে ব্যাট করেছে পাকিস্তান। আর তাই টস শিরোপার লড়াইয়ে গড়ে দিতে পারে ভাগ্য।
এমনিতে পরিসংখ্যান-ঐতিহ্যে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ঢের এগিয়ে পাকিস্তান। কিন্তু এশিয়া কাপের বিষয়টা ভিন্ন। এই আসরে শ্রীলঙ্কার পাঁচ বারের বিপরীতে পাকিস্তান শিরোপা জিতেছে মোটে দুই বার। সর্বাধিক সাত বার শিরোপা জিতেছে এবার ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হওয়া ভারত। এশিয়া শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে নিজেদের অপেক্ষাকৃত অনুজ্জ্বল রেকর্ডকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ পাকিস্তানের সামনে।
আনপ্রেডিক্টেবল দলটির জন্য আপাতত বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে অধিনায়ক বাবর আজমের রান না পাওয়া। পুরো আসরে তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি মোটে ৩০ রানের। ফাইনালের জন্য নিজের সেরাটা জমিয়ে রেখেছেন কিনা সেটাও এখন দেখার ব্যাপার। এদিকে রান চেজে লঙ্কানদের দলগত প্রয়াস ঈর্ষণীয়।
তাদের দেশের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের জন্য শিরোপা জিততে চায় দুটি দলই। পাকিস্তান কোচ সাকলায়েন মুশতাক জানান, শিরোপার দিকে তাকিয়ে আছে দেশের মানুষ।
লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা বলেন, ‘দেশবাসীকে আমরা একটা বার্তা দিতে চাই। অনেক দুঃখ দুর্দশার মধ্যেও দেশের মানুষের ভালোবাসা ও সমর্থন আমরা পাচ্ছি।’