বরগুনার পাথরঘাটা থেকে দক্ষিণ উত্তাল বঙ্গোপসাগরে ৪১ মাছধরা ট্রলারসহ ৪০০ জেলে নিখোঁজ হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে উত্তাল সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ৪১ ট্রলারসহ প্রায় ৪০০ জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে নিখোঁজ ট্রলার মালিকদের বরাত দিয়ে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: মাসুম মিয়া এ তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন। এর আগে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা পৌরশহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুজন হাওলাদারের মালিকানাধীন এফবি হাওলাদার নামের একটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটলেও তাদের ১৭ জেলেকে অন্য একটি ট্রলার উদ্ধার করে পাথরঘাটা বিএফডিসি ঘাটে নিয়ে এসেছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ট্রলার মালিক, ট্রলার ও জেলেদের নাম জানা যায়নি।
মো. মাসুম মিয়া জানান, কয়েক দিন আগে একটি নিম্বচাপ শেষ হয়েছে, এর পরেই উপকূলের জেলেরা তাদের ট্রলারে রসদ সামগ্রী নিয়ে মাছ শিকারের জন্য গভীর সমুদ্রে রওয়ানা দেয়। আবারো নিম্নচাপ শুরু হলে সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় গত বৃহস্পতিবার থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন উপজেলার কয়েকটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত পাথরঘাটা উপজেলায় ৩০টি এবং মহিপুরে ১১টি মাছধরা ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে। এফবি হাওলাদার ট্রলারটি ডুবে গেলেও তাদের জেলেদের উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ঘটনার সাথে সাথেই কোস্টগার্ডসহ সরকারি দফতরগুলোকে জানানো হয়েছে এবং বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জেলেদের সন্ধানে বেশ কয়েকটি ট্রলার উদ্ধার অভিযানে কাজ করে যাচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নিখোঁজ ট্রলার ও জেলেরা সমুদ্রে ডুবে যেতে পারে।
বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো: দুলাল মাস্টার বলেন, হঠাৎ করে নিম্নচাপ শুরু হলে এফবি হাওলাদার নামের একটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। পাথরঘাটা আনছার খানের মালিকানাধীন ট্রলারের মাঝি ইসমাইল হোসেন ডুবে যাওয়া ওই ট্রলারের ১৭ জেলেকে ভাসতে দেখে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। উদ্ধারকৃত জেলেরা সুস্থ আছেন। এখন পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ট্রলারের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে হঠাৎ এই প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পরে নিখোঁজ ট্রলারগুলো ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কেএম সাফিউল কিঞ্জল জানান, গত দুই দিন ধরে নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় অনেক ট্রলারডুবি ও নিখোঁজের ঘটনা শুনেছি। এ খবর পাওয়ার সাথে সাথেই কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে পাথরঘাটা, হাতিয়া, চরফ্যাশন, নিজামপুর, পায়রা পোর্টসহ মোট ৬টি টিম গভীর সমুদ্রে জেলেদের উদ্ধার অভিযানে রয়েছে এবং গতকালও ছিল। আবারো আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে এ উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে যা সারাদিন চলমান থাকবে।