পবিত্র কোরআনের প্রত্যেকটি অক্ষরে রয়েছে সাওয়াবের ভান্ডার। যে ব্যক্তি নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত করবে তার মৃত্যুর পর কোরান তার পাশে দাঁড়িয়ে তার জন্য সুপারিশ করবে। তাকে জান্নাতে পৌঁছানো পর্যন্ত কোরআন তার পাশ থেকে সরবে না। সূরা ওয়াকিয়ার ফজিলত
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) যখন অসুস্থ হয়ে মৃত্যুশয্যায় শায়িত ছিলেন তখন আমিরুল মুমিনীন হযরত ওসমা (রাঃ) তার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য তার কাছে যান। হযরত ওসমা (রাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করেন আপনার কি অসুখ? তখন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ বললেন আমার পাপসমূহ আমার অসুখ, হযরত ওসমান (রাঃ) বললেন আপনি কি চান ইবনে মাসউদ ( রাঃ) বললেন আমি আল্লাহর রহমত কামনা করি। হযরত ওসমান গনী (রাঃ) বললেন আমি আপনার জন্য কি কোন চিকিৎসক ডাকবো? ইবনে মাসউদ (রাঃ) বললেন চিকিৎসকই আমাকে রোগাক্রান্ত করেছেন। ওসমান (রাঃ) বললেন আমি কি আপনার জন্য বায়তুলমাল থেকে কোন সম্পদ বরাদ্দ দিব। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বললেন আমার কোন সম্পদের প্রয়োজন নেই। ওসমান (রাঃ) বলেন এটি আপনার পর আপনার সন্তান দের উপকারে আসবে। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বললেন আপনি চিন্তা করছেন যে আমার মৃত্যুর পর আমার সন্তানেরা দারিদ্র ও উপবাসে পতিত হবে। কিন্তু আমি এরূপ চিন্তা করিনা আমি আমার কন্যাদেরকে সূরা ওয়াকিয়া শিক্ষা দিয়েছি এবং জোর নির্দেশ দিয়ে রেখেছি যে তারা যেন প্রতি রাতে সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করে। আমি রাসূল (সাঃ) কে বলেতে শুনেছি
যে ব্যক্তি প্রতিরাতে সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করবে সে কখনো অভাবগ্রস্ত হবে না অনাহারে থাকবে না রিজিকের অভাবে কষ্ট করবে না তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করতে পারবে না
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করতে পারবে না। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) তার কন্যাদের প্রতি রাতে সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন [ বাইহাকী: শুআবুল ঈমান-২৪৯৮]
অন্য এক হাদীসে আছে সূরা ওয়াকিয়া হল ধনাঢ্যতার সূরা সুতরাং তোমরা নিজেরাও এই সূরা পাঠ কর এবং তোমাদের সন্তানদের ও এই সূরার শিক্ষা দাও । অন্য এক বর্ণনায় আছে তোমাদের স্ত্রীদের ও এই সূরার শিক্ষা দাও হযরত আয়েশা (রাঃ) কে সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করার জন্য আদেশ করা হয়েছিল। সূরা আর রহমান সূরা হাদীদ ও সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত কারীদের কে কেয়ামতের দিন জান্নাতের অধিবাসী হিসেবে ঢাকা হবে সুবহানাল্লাহ।
অভাবের সময় সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত তো হাদীসের দ্বারা প্রমাণিত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ (রাঃ) তার সন্তানদের জন্য একটি দিনার ও না রেখে যাওয়ার কারণে তাকে তিরস্কার করেছেন তখন তিনি বললেন আমি আমার সন্তানদের জন্য সূরা ওয়াকিয়া রেখে গেলাম [ফয়জুল কাদির-৪/৪১]
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পবিত্র কালামের বরকত কত পাওয়ারফুল তা কি আমরা অনুধাবন করতে পারি।
আসুন সকলে সূরা ওয়াকিয়া পাটের এই মূল্যবান আমলটি প্রতিদিন পালন করি। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে প্রতিদিন সূরা ওয়াকিয়ার উপর আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।