দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান। তাপদাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে অ্যাসেম্বলি।
সারাদেশে চলমান তাপ প্রবাহের মধ্যে আজ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় বন্ধ রয়েছে শুধু প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়। সময়সূচিতে পরিবর্তন এনে ক্লাস শুরু হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নতুন সূচি অনুযায়ী-এক শিফটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলবে সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। আর দুই শিফটের বিদ্যালয়ে প্রথম শিফট ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় শিফট পৌনে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে।
তবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ কিছু কার্যক্রম। গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, শ্রেণি কার্যক্রমের যে অংশটুকু শ্রেণি কক্ষের বাইরে পরিচালিত হয়ে থাকে এবং সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসতে হয়, সে সব কার্যক্রম সীমিত থাকবে। তাপদহ এবং অন্যান্য কারণে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে যে শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা পূরণ এবং নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখন ফল অর্জনের জন্য পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত শনিবারও শ্রেণি কার্যক্রম চলবে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, পবিত্র ঈদ উল ফিতরের ছুটির ধারাবাহিকতায় তাপদাহের কারণে গত ২০ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের ঘোষিত ছুটি শেষ হওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আনাগোনা। ব্যস্ততা বেড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষিকা ও সংশ্লিষ্টদের।
মীরপুর বাংলা স্কুল এন্ড কলেজ এর সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী আতিকা রাহমান বলেন, দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় বাসাতে ছিলাম। আজ তাই স্কুল খোলার পর নির্ধারিত সময়ে চলে এসেছি। যদিও এতো গরমে স্কুলে থাকা কষ্ট হবে। বাসায় ছিলাম বলে এতো গরম টের পাওয়া যায়নি।
মীরপুর রূপনগর এলাকায় কামাল আহমেদ মজুমদার স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোজাহারুল ইসলাম বাসসকে বলেন, ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ছুটি বাড়ানো হয়। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন পর ছুটি কাটিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসেছে।
তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের বাসা থেকে পানি ও স্যালাইন আনার পরামর্শ দিয়েছি। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে বলে গতকাল থেকে শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণি কক্ষ পরিষ্কার করা হয়েছে। আলো বাতাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে পাখা বা ফ্যান রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের যেন কোন ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা সচেতন রয়েছি।
সাকিলা জামাল নামের একজন অভিভাবক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে কিন্তু সারা দেশের তাপপ্রবাহের কারণে শ্রেণিকক্ষের সময়সূচী কমালে ভাল হতো।
স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলো খুবই সময়োপযোগী একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি আমাদের সন্তান ও অভিভাবকদেরও সচেতনতা বাড়াতে হবে। তবে আশা করি এ সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।