ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভারত ও বাংলাদেশের একজন আইকনিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারতে আমাদের জন্য একজন আইকনিক। তিনি ছিলেন একজন দুঃসাহসিক ও দৃঢ়বিশ্বাসী।
জয়শঙ্কর আজ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর সৈনিক বা কর্মকর্তাদের সরাসরি বংশধরদের ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তি তুলে দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০টি মুজিব স্কলারশিপ, দশম শ্রেণীতে ১০০টি এবং দ্বাদশ শ্রেণীর স্তরে ১০০টি, যুদ্ধে ভারতীয় প্রবীণ সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাঁদের বংশধরদের জন্য আমাদের এই শুভেচ্ছা উপহার, যারা আমাদের জন্য ১৯৭১ সালে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন।’
জয়শঙ্কর ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বৃত্তি চালু করায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, ‘ভারতের সরকার ও জনগণের পক্ষে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ভারতীয় জনগণের কাছে সব সময় সম্মানিত ও স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্তব্য উল্লেখ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতীয় বীরও বটে।’
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে জয়শঙ্কর বলেন, উভয় দেশ তাঁর ওপর একটি বায়োপিক তৈরি করছে, যা এখন সমাপ্তির পথে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে ভারতীয় বীর শহীদ ও আহতদের সম্মানে আয়োজিত প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্র বৃত্তি চালু করার অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আজ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা তার জন্য সম্মানের ব্যাপার।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী, আপনি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এক উচ্চমাত্রায় নিয়ে গেছে।
একই সময় তিনি বলেন, আমরা জানি সব ধরনের সম্পর্কই ঐতিহাসিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। রক্ত দিয়ে গড়া উভয় দেশের ৫০ বছরের সম্পর্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
জয়শঙ্কর বলেন, ১৯৭১ সালে যখন যুদ্ধ শুরু হয় ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, মুক্তিবাহিনীর সাথে আমাদের সম্পর্কের কথা সবাই ভালো করে জানেন। আমরা আমাদের অনেক সাহসী মানুষ ও কর্মকর্তাকে এই মুক্তিযুদ্ধে হারিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘আমি আজ শুধু বাংলাদেশের বীর শহীদদের নয়, বরং আমাদের বীর শহীদদের প্রতিও সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, অনেক বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধারা দুই দেশের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এই সেতুবন্ধনে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের প্রবীণ সদস্যদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কারণে তাদের পরিবারের সদস্যরা আজ এখানে সমবেত হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষা বৃত্তি চালু দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো অনুপ্রাণিত করবে।’
‘যে সমস্ত তরুণ যুবক এই পুরস্কার গ্রহণ করছে আমি তাদেরকে অভিনন্দন ও ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা করছি।’
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।