প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে আমরা এমনভাবে গড়ে তুলব, যাতে বাঙালি জাতিকে আর বিশ্বের কারো কাছে মাথানত করে চলতে না হয়। আমরা উন্নত-সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করেই এগিয়ে যাব। ’ দেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন-অগ্রগতিকে আলোর পথের যাত্রা আখ্যায়িত করে একে অব্যাহত রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সরকার প্রধান বলেন, ‘অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আমরা যে এগিয়ে যাচ্ছি, সে যাত্রা যেন অব্যাহত থাকে জাতির কাছে, প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে, সেটাই আমরা আহ্বান, অনুরোধ।

 


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বৃহস্পতিবার ৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ প্রদানকালে ভাষণে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এই পুরস্কার বিতরণ করেন।

কভিড-১৯-এর কারণে বিশ্ব অর্থনীতির মন্দাভাব এবং দেশে দেশে খাদ্যসংকট থাকলেও বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পারায় তাঁর সরকারের সাফল্যের উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে গণমাধ্যমকে ছেড়ে দেওয়ায় এর অবাধ স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে অনেক ছোটখাটো বিষয়ও সামনে চলে আসে; কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশে খাদ্যসংকটের যে বিষয় রয়েছে, তা তারা প্রচার করে না। প্রচার না করলেও আমরা জানি অনেক উন্নত দেশে ব্যাপকভাবে খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। যারা বিশ্বে মোড়লগিরি করে বেড়ায় তাদেরও অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। সেদিক বিবেচনা করলে করোনা মোকাবেলা করেও বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারা আমরা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি। ’ এ সাফল্যের জন্য সহকর্মী ও সংশ্লিষ্টদের দিন-রাত পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে তাঁদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য তিনি তাঁর দলসহ সহযোগী সংগঠন ও দেশবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘সরকারি লোকজন যেমন করেছে, তেমনি আমার দলের লোকজনও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ’

মঞ্চ থেকে নেমে দুই মুক্তিযোদ্ধার হাতে পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানের হাতে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ তুলে দিয়েছেন। শেখ হাসিনা মঞ্চ থেকে নেমে এসে দুই মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুদ্দীন আহমেদ ও আব্দুল জলিলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

বাংলাদেশ সুখী দেশের তালিকায় ৯৪তম

এ ছাড়া স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য এবার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা (বীরবিক্রম) ছাড়াও মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস এবং সিরাজুল হক (মরণোত্তর) ‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন। ‘চিকিৎসাবিদ্যায়’ পুরস্কার পেয়েছেন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ও অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলাম এবং ‘স্থাপত্য’ ক্যাটাগরিতে প্রয়াত স্থপতি সৈয়দ মইনুল হোসেন স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়া ‘মুজিব বর্ষে’ বাংলাদেশকে শতভাগ বিদ্যুতায়নে সাফল্যের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে এবং বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটকে ‘গবেষণা ও প্রশিক্ষণ’ বিভাগে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করা হয়।

প্রত্যেক পুরস্কারপ্রাপ্তকে একটি স্বর্ণপদক, একটি সার্টিফিকেট ও একটি সম্মানী চেক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এবং ‘স্বাধীনতা পুরস্কার পদক-২০২২’ বিজয়ীদের সংক্ষিপ্ত জীবনী পড়ে শোনানো হয়।

সূত্র : বাসস।

 

দৈনিক সময়ের সংবাদ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।