নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্প পরির্দশন করতে যাচ্ছেন রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দল। আজ শনিবার ভোরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার উখিয়া ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে তারা ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সরকারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. শামসুদ্দোজা বলেন, ভোরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দুটি বাসে করে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলটি চট্টগ্রামের পথে রওনা হন। চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে তাদের নৌ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে জলযানে করে নোয়াখালীর ভাসনচরে নেওয়া হবে।
তিনি আরো জানান, প্রতিনিধি দলটিতে প্রায় ৪০ জন রোহিঙ্গা নেতা রয়েছেন। এর মধ্যে ২ জন নারী সদস্যও রয়েছেন। ভাসানচরে আশ্রয়ণ প্রকল্প পরির্দশন শেষে আগামী মঙ্গলবার তাদের টেকনাফে শরণার্থী শিবিরে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
মো. শামসুদ্দোজা আরো বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা হয়েছে, সেখানে রোহিঙ্গারা কীভাবে বসবাস করবেন, তা নিজ চোখে দেখতেই সরকার ‘গো অ্যান্ড সি’ এই পরির্দশনের ব্যবস্থা করেছে। রোহিঙ্গা নেতারা আশ্রয়ণ প্রকল্পটি ঘুরে দেখবেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, বর্তমানে ভাসানচরে বসবাস করা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলবে পরিদর্শনে যাওয়া প্রতিনিধি দলটি। তারা সেখানে ইতোমধ্যে বসবাস করা রোহিঙ্গাদের জীবনমান পর্যবেক্ষণ করবেন। এরপর টেকনাফে ফিরে এসে শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের ওই আশ্রয়ণ প্রকল্প সম্পর্কে ধারণা দিবেন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাড়ে সাত লাগের মতো রোহিঙ্গা। আগে পালিয়ে আসাদের নিয়ে বর্তমানে কক্সবাজারের টেকনাফে শরণার্থী শিবিরে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। তাদের কারণে একদিকে যেমন প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে সৃষ্টি হচ্ছে নানা সামাজিক সমস্যা। তাই রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে কক্সবাজার থেকে সরিয়ে নিতে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত ভাসানচরে একটি আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করে সরকার।
১০ হাজার একর আয়তনের ভাসানচরে প্রায় ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো নির্মাণ করে সরকার। সেখানে প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। ইতোমধ্যে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা ৩ শতাধিক রোহিঙ্গাকে সেখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।