টানা পাঁচদিন উদ্ধারকর্মীদের আপ্রাণ চেষ্টার পরও জীবিত উদ্ধার করা গেল না মরক্কোর পাঁচ বছর বয়সী শিশু রায়ানকে। স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় কূপ থেকে শিশুটির লাশ বের করে আনেন উদ্ধারকর্মীরা। খবর বিবিসি ও দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের।
এর আগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মরক্কোর শেফচাউয়েন প্রদেশের ইঘরানের উত্তর গ্রামে অবস্থিত ১০৫ ফুট গভীর কুয়ায় কুয়ায় আটকে পড়েছিল সে। তাকে উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছিল উদ্ধারকর্মীরা।
উদ্ধার অভিযানে গিয়ে উদ্ধারকর্মীদের পড়তে হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায়। মাটির গভীরে খনন কাজের ফলে ভূমিধসের আশঙ্কায় ভারি যন্ত্রপাতি ও বুলডোজারের পরিবর্তে কোদাল দিয়ে ধীর গতিতে করা হয় খনন কাজ। তবে সময় যত গড়ায় রায়ানের বেঁচে ফেরার আশা ততই কমতে থাকে।
কুয়ার পাশে সম গভীরতার গর্ত তৈরি করে দুই কূপের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে। কিন্তু ভূতলের পাথর আর বালিযুক্ত মাটির কারণে ভূমিধসের শঙ্কা দেয়। ফলে ধীরগতিতে কোদাল দিয়ে কাজ করা হয়।
সন্তানের বেঁচে ফেরার অপেক্ষায় আশায় বুক বেঁধেছিল রায়ানের বাবা-মা। নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন তার স্বজন ও হাজারো এলাকাবাসী। উৎসুক মানুষের শুধু একটায় প্রার্থনা ছিল- বেঁচে ফিরুক শিশু রায়ান।
রায়ানের উদ্ধারের আকুতি মরক্কোর সীমা ছাড়িয়ে গেছে গোটা বিশ্বে। হ্যাশট্যাগ #SaveRayan এর মাধ্যমে জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই প্রকাশ করেছে একাত্মতা।
উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়, রায়ানের বাবা চারদিন আগে যখন কুয়াটি মেরামতের কাজ করছিলেন তখন রায়ান হঠাৎ করে ১০৫ ফুট গভীরে পড়ে যায়।
মরক্কোর উত্তরাঞ্চলীয় একটি গ্রামে শিশুটিকে উদ্ধারের এই তৎপরতা মরক্কোও প্রতিবেশী আলজেরিয়ার মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। উদ্ধারকাজ দেখতে ঘটনাস্থলে জড়ো হয় হাজার হাজার মানুষ। সমবেত লোকজন হর্ষ-ধ্বনি দিয়ে উদ্ধারকারীদের উৎসাহ যোগায়।
কিন্তু অবশেষে রায়ানকে উদ্ধার করা হলেও ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়। রায়ানের মৃত্যুর ঘটনায় মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ তার পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।