কিটোপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ শরীরে গেলে শকুন মারা যায়। এ কারণে বাংলাদেশে ‘মহাবিপন্ন’ প্রাণীর তালিকায় থাকা শকুন রক্ষায় কিটোপ্রোফেন জাতীয় ভেটেরিনারি ওষুধের উৎপাদন বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় কিটোপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ বন্ধ করে ‘ম্যালোক্সিক্যাম’ জাতীয় ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, দেশে খুবই ডেঞ্জারাসলি শকুনের সংখ্যা কমে গেছে। খুবই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে শকুন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাব মতে, সত্তরের দিকে দেশে ৫০ হাজারের মতো শকুন থাকলেও তা কমে বর্তমানে মাত্র ২৬০টি আছে। তাও ক্রিটিক্যাল অবস্থায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এর অন্যতম কারণ হলো কিটোপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ব্যবহার। এ ওষুধটা শকুনের শরীরে গেলে শকুন মারা যায়।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘ফার্মাসিউটিক্যালস, ড্রাগ কোম্পানি ও এক্সপার্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রস্তাব নিয়ে এসেছে যে, এই কিটোপ্রোফেন ওষুধ যদি বন্ধ না করা যায়, তাহলে শকুন দেশে বাঁচবে না। আর শকুন যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে পুরো দেশে যে পরিমাণ মৃত পশু-পাখি থাকে, সেগুলোর কারণে পরিবেশ নষ্ট হয়, রোগজীবাণু ছড়ায়। শকুন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় একটা অন্যতম উপজীব্য হিসেবে কাজ করে। সেজন্য তারা বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা, সভা-সিম্পোজিয়াম করে সিদ্ধান্তে আসছে যে কিটোপ্রোফেনের উৎপাদন বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কিটোপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ বন্ধ করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ‘ম্যালোক্সিক্যাম’ নামে একটি ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব কম। এটা ব্যবহার করলে শকুন বা অন্যান্য পাখির ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না। লাইফ রিস্ক হবে না। মন্ত্রিসভা এটাও অনুমোদন করেছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ম্যালোক্সিক্যাম ওষুধ দেশের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়েছে। ওষুধটি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। কিটোপ্রোফেন বাজার থেকে তুলে নিলে কোনও সমস্যা হবে না।’ ম্যালোক্সিক্যামের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।