তাহিরপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ছবি তোলায় সাংবাদিককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরের পর তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। এমন দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই সাংবাদিকের নাম কামাল হোসেন রাফি। তিনি তাহিরপুর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং দৈনিক সংবাদ ও দৈনিক শুভ প্রতিদিনের উপজেলা প্রতিনিধি।
জানা যায়, গতকাল দুপুরে যাদুকাটা নদীর তীর কেটে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন করা হচ্ছিল। এ ঘটনার ছবি তুলতে যান সাংবাদিক কামাল হোসেন রাফি। ছবি তুলতে দেখে নদীতীর কাটার সঙ্গে জড়িতরা তাকে মারধর করে। পরে স্থানীয় ঘাগটিয়া চকবাজারে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। ভাইরাল ১ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মারধরের পর সাংবাদিক কামাল হোসেনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। তার মুখমন্ডলে আঘাতের চিহ্ন। চারপাশ ঘিরে রেখেছে লোকজন। একপর্যায়ে তার বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। তবে হামলাকারীদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা যাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে পাড় কেটে বালু-পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। তাদের অভিযোগ, চক্রটির কারণে যাদুকাটা নদী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। জনসম্মুখে সাংবাদিককে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়েছে। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে তাহিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক কামাল হোসেন জানান, যাদুকাটা নদীতে প্রতিদিন প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে শত শত শ্রমিক অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন করে। সোমবার সকালে যাদুকাটা নদী থেকে বালু পাথর উত্তোলনের ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় শ্রমিকরা তাকে বাধা দেয়। একপর্যায়ে ক্যামেরা, মোবাইল ফোন এবং মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে। যাদুকাটা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের সদস্যরা তাকে নির্যাতন করেছে। তার মাথা, কপাল এবং চোখে অনবরত আঘাত করতে থাকে।
তাহিরপুর থানার ওসির দায়িত্বে থাকা এসআই দীপঙ্কর জানান, ঘটনা শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, যাদুকাটা নদী থেকে বালু-পাথর উত্তোলন অবৈধ উল্লেখ করে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ জানান, ঘটনাটি আমরা শুনেছি। খুবই গুরুতর ঘটনা ঘটে গেছে। আমরা এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক মামলা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।