জাতীয় সংসদকে জনগণের আশা ও আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু বলে উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। একই সঙ্গে তিনি গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা, আইনের শাসন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি শ্রেণি ও পেশা নির্বিশেষে সবার মধ্যে একতা তৈরির জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার চলতি একাদশ জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনের প্রথম কার্যদিবসে ভাষণ প্রদানকালে এ আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের পাশাপাশি বিরোধীদলগুলোকেও স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সহনশীলতা, মানবাধিকার এবং আইনের শাসন জোরদার করতে গঠনমূলক ভূমিকা নিতে হবে।’ এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন এবং বিরোধীদলগুলোকে যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘দেশ ও জাতির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সুশাসন, গণতন্ত্র এবং উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অক্ষুণ্ণ রেখে দেশ থেকে দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে সকলকে আরও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আসুন, আমরা সকল বিভেদ ভুলে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে শোষণমুক্ত একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে লাখ লাখ শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।’
রাষ্ট্রপতি এ সময় অর্থনীতি, ব্যবসা ও বাণিজ্য, কৃষি, বিদ্যুৎ, বৈদেশিক সম্পর্ক, পর্যটন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ও শিশু উন্নয়ন, পল্লী উন্নয়ন, প্রবাসী কল্যাণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, আইসিটি এবং জনপ্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের কৃতিত্বের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে। আমাদের শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে হবে। এ বছর আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করব। তবে আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়া।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার জনগণের পূর্ণ অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবে বলেও দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করেন আবদুল হামিদ।
সরকারি কর্মচারীদের জন্য ডোপ টেস্ট প্রবর্তনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাদকের অপব্যবহার, জঙ্গিবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির প্রশংসা বিশ্বজুড়ে হয়েছে।’
সরকার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সময়কাল ১৬ মার্চ ২০২০ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারির কারণে মুজিববর্ষ উদযাপনের জন্য গৃহীত কর্মসূচিগুলো যথাসময়ে শেষ করা যায়নি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে গৃহীত সব কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে, এই প্রচেষ্টা বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে ইতিবাচক একটি ভূমিকা পালন করবে।’
রাষ্ট্রপতির ভাষণের সময় অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।