করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সকালে ২০২১ শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এ কথা জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের হাত থেকে কখন যে সারা বিশ্ব মুক্তি পাবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। আমরা যখনই সিদ্ধান্ত নিলাম যে স্কুল খুলব তখনই আবার নতুন করে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা আসলো। কাজেই ছেলে মেয়েদের কথা চিন্তা করেই আবার স্কুল খোলার জন্য ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছি। এর মধ্যে যদি অবস্থা ভালো হয় তাহলে খোলা হবে আর না হলে আমরা করব না। আমি মনে করি বিভিন্ন ডিজিটাল পদ্ধতিতে এ শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পর দফায় দফায় বাড়ানো হয় ছুটির মেয়াদ।
পঞ্চম ধাপে ঘোষণা অনুযায়ী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তা শেষ হওয়ার আগেই ১৮ ডিসেম্বর নতুন ঘোষণায় ছুটি বাড়িয়ে করা হয় ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। করোনার সংকটে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় স্কুলগুলি বন্ধ, কলেজগুলি ইউনিভার্সিটিগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে। সেটাও একই কারণে। ছেলে মেয়েরা যেন সংক্রমিত না হয় বা শিক্ষকরা সংক্রমিত না হয় বা অসুস্থ না হয়, করোনা ভাইরাস দ্বারা যেন আক্রান্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই এ ব্যবস্থাটা নেয়া হচ্ছে। তারপরও বইগুলো আমরা হাতে তুলে দিচ্ছি এই কারণে যাতে আমাদের পাঠ্য কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।
করোনাভাইরাস ঝুঁকি এড়াতে সমাবেশ না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের মাঝে ভাগে ভাগে নতুন বই বিতরণের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০২১ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিকে প্রায় ১০ কোটি ২৫ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৫ বই বিনামূল্যে বিতরণের পদক্ষেপ নেয়া করা হয়েছে। এ কার্যক্রমে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত নৃগোষ্ঠির শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের নিজস্ব ভাষায় দেয়া হচ্ছে ২ লাখ ১৩ হাজার ২২৮টি বই। মাধ্যমিক স্তরে দেয়া হচ্ছে ২৪ কোটি ১০ লাখ ৭৯ হাজা ৮৫৭টি বই।
শিক্ষার্থীরা যেন নতুন বইয়ের আনন্দ পায় সেজন্য প্রতিবছর বই উৎসব করা হয় বলেও জানান সরকার প্রধান। নতুন বই পেলে ভালোও লাগে। মলাটটা লাগাবে, নামটা লিখবে সুন্দরভাবে, দেখবে-পড়বে সেটাই একটা আলাদা আনন্দ। সেই আনন্দটাই যেন আমাদের ছেলেমেয়েরা পায় সেজন্যই আমরা প্রতি বছর ব্যবস্থা নেই।
এ বছর প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত মোট চার কোটি ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ২২৬ শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে ৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬২ হাজার ৪১২টি বই।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।