
পবিত্র ঈদুল ফিতরের পঞ্চম দিনে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে কর্মজীবী মানুষ। গতকাল শুক্রবার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়। তবে বিগত বছরগুলোর মতো তীব্র যানজট আর যানবাহনের চাপ নেই রাজধানীর প্রবেশ ও বাহির মুখে।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছুটি শেষ না হওয়ায় ফিরতি যাত্রীর চাপ কম। তবে আগামীকাল (আজ) চাপ বাড়তে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদে ঘরমুখো মানুষ যেভাবে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরেছিল ঠিক সেভাবেই রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে। ফেরার পথে চাপ কম থাকায় কোথাও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না যাত্রীদের। ফলে ভোগান্তিহীন ফিরতি যাত্রায় স্বস্তি প্রকাশ করছেন যাত্রীরা।
সরেজমিনে শুক্রবার রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, ছুটি চলাকালে গত কয়েক দিনের তুলনায় সড়কে বেড়েছে যান চলাচল। বেড়েছে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও। কিছুক্ষণ পর পর টার্মিনালে আসছে ফিরতি ঈদযাত্রার দূরপাল্লার পরিবহন। তবে ফিরতি এ যাত্রায় দূরপাল্লার পরিবহনে চোখে পড়ার মতো যাত্রীর চাপ দেখা যায়নি। একই অবস্থা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালেও।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ঈদ আনন্দ শেষে সিলেট থেকে ফেরা নুরুল চৌধুরী বলেন, ‘শনিবার থেকে থেকে অফিস শুরু হবে। তাই আজ (গতকাল) ফিরে এসেছি। রাস্তাঘাটে আগের মতো যানজট নেই। ভালোভাবেই ঢাকায় ফিরতে পেরেছি।’
দিনাজপুর থেকে পরিবার নিয়ে রাজধানীতে ফিরেছেন জুবায়ের হোসেন। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (শনিবার) ছুটি শেষ হবে আমার। রবিবার থেকে অফিস শুরু। যেহেতু পরিবার নিয়ে ফিরতে হলো তাই আজই (গতকাল) ফিরে এলাম যাতে একদিন অন্তত বিশ্রাম নিয়ে অফিস শুরু করতে পারি।’
শ্যামলী পরিবহনের চালকের সহকারী রাকিব মিয়া বলেন, যাত্রী আছে তবে খুব বেশি তা না। টুকটাক যাত্রী আছে। বাসে মোটামুটি সব সিটেই যাত্রী ছিল। কিন্তু আগে যেমন যাত্রীর চাপে একাধিক গাড়ি ছেড়ে এসেছে এবার তেমনটা নেই।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ‘তিশা প্লাস’ কাউন্টারের কর্মী আব্দুল হাকিম জানান, ঈদের আগের তুলনায় এখন যাত্রী ভালো আছে। ঢাকা ছাড়ার গাড়িতেও সিট ফাঁকা থাকছে না, ঢাকায় ফেরার গাড়িতেও সিট ফাঁকা নেই।
বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. জুবায়ের মাসুদ বলেন, ‘এবারের ঈদযাত্রায় বাস মালিক সমিতির অবস্থা তেমন ভালো না। ঈদযাত্রার যাত্রী নামিয়ে ফিরতি যাত্রায় বাস খালি আসায় অনেক লস গুনতে হয়েছে মালিকদের। তার পরও যাত্রীদের স্বস্তির যাত্রা উপহার দিতে পেরে আমরা সন্তুষ্ট।’
এদিকে সার্ভার জটিলতার কারণে বন্ধ থাকা অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি কার্যক্রম ১৫ ঘণ্টা পর গতকাল বেলা ১১টা থেকে ফের শুরু হয়। কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সার্ভার জটিলতায় অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রির কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কমলাপুর রেলস্টেশনে শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছিল বেশ কয়েকটি ট্রেন। তবে বেলা ১১টা থেকে অনলাইন টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হওয়ায় শিডিউল জটিলতা কাটতে শুরু করেছে।
এর আগে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কাউন্টার থেকে শুধু ব্ল্যাক পেপার টিকিট (বিপিটি) দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে শুধু স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করা হয়। আন্তঃনগর ট্রেনের কোনো আসন দেওয়া হয়নি।
টিকিটের জন্য কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা জানান, আজ (গতকাল) শুধু হাতে লেখা টিকিট দেওয়া হচ্ছে। কোনো সিট আছে কি না, সেটি দেখার সুযোগ নেই। তারা শুধু স্ট্যান্ডিং টিকিট দিচ্ছে।