বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রথম টেস্টটিউব শিশুর জন্ম হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় সি-ব্লকে মা ও প্রসূতি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে এ টেস্টটিউব নবজাতকের জন্ম হয়। টেস্টটিউব নবজাতক ও তার মা সুস্থ আছেন।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিএসএমএমইউর ইনফার্টিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানুর তত্ত্বাবধানে সফল সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে প্রথম টেস্টটিউব বেবির জন্ম দেন।
প্রথম টেস্টটিউব নবজাতকের সিজারিয়ান সেকশনের সময় অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের শিক্ষক নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেব্রবত বনিক, ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, নিউন্যাটোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইন এন্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারজানা দীবা, সহযোগী অধ্যাপক (অনারারী) ডা. শাহীন আরাসহ ১৭ জন চিকিৎসক, ৫ জন নার্স অংশগ্রহণ করেন।
বরিশালের বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম টেস্টটিউব বেবির জন্ম দেওয়া নিঃসন্তান দম্পতি দীর্ঘ ১৩ বছর যাবত বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগছিলেন। পরবর্তীতে ৮ বছর আগে দম্পতির রোগটি ডায়াগোনোসিস হয়। এ দম্পতি বিভিন্ন জায়গায় বন্ধ্যাত্ব সমস্যা নিরসনে চিকিৎসা গ্রহণ করলেও কোন সফলতা বা তারা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) এর সুপরামর্শও পাননি।
পরে ২০২২ সালে এই দম্পতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফার্টিলিটি বিভাগে চিকিৎসা শুরু করেন এবং পরিপূর্ণ ইভাউলিউশন শেষে এই বিভাগ তাকে আইভিএফ উইথ আইসিএসআই (ইন্ট্রা সাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইনজেকশন, যা আইসিএসআই নামে পরিচিত, ডিমের সাইটোপ্লাজমে শুক্রাণু কোষকে ইনজেকশন দেওয়ার একটি কৌশল।
এই কৌশলটি আইভিএফের একটি বিশেষ রূপ যা পুরুষ-ফ্যাক্টর বন্ধ্যাত্বের গুরুতর ক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়) এর পরামর্শ প্রদান করে এবং স্টেম সেল থেরাপির গ্রহণের মাধ্যমে তারা এ চিকিৎসা শুরু করেন।
যথাযথ চিকিৎসা শেষে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীতে এই নবজাতকের মা গর্ভধারণ করেন এবং নিয়মিত চেকআপে থাকেন। ৩৮ সপ্তাহের পর সুদীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সফলতার নিদর্শন স্বরূপ আজকে ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টায় এ টেস্টটিউব নবজাতকের জন্ম হয়।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এ টেস্টটিউব নবজাতকের জন্ম গ্রহণের মাধ্যমে আরেকটি সফলতার পালক যুক্ত হল। নিঃসন্তান দম্পতিদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটানোর জন্য সব সময় কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফার্টিলিটি বিভাগ। তাদের দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য দেশবাসীর দোয়া প্রার্থনাও করেন তিনি।