করোনা সংক্রমণ বাড়ার ধারাবাহিকতায় একদিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা টানা দুই দিন দুই হাজার ছাড়াল। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৮৭ জন। এ সময় করোনায় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৪৮৯টি নমুনা পরীক্ষা করে এই নতুন রোগীদের শনাক্ত করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। সেদিন ২ হাজার ১৫০ জনের কোভিড শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার তিনজন সহ এ পর্যন্ত মোট ২৯ হাজার ১৪৫ জনের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। গত প্রায় তিন মাসের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক দিনে তিনজনের মৃত্যু হয় দুই দিন আগে। মাঝে টানা ২০ দিন করোনায় মৃত্যুহীন ছিল বাংলাদেশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গতকাল যা ছিল ১৫ দশমিক ২ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৩৬১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরো ২০০ জন কোভিড রোগী। তাদের নিয়ে ১৯ লাখ ৭ হাজার ৬৭ জন সেরে উঠলেন।
সংক্রমণ কমার ধারায় গত ৫ মে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমেছিল ৪ জনে। তবে গত ২২ মের পর থেকে টানা এক মাসের বেশি সময় ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবারো বাড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারণ করা মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে রোগী শনাক্তের হার টানা দুই সপ্তাহের বেশি ৫ শতাংশের নিচে থাকলে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।
দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষে বিশ্বে ছড়াতে শুরু করে করোনার অতি সংক্রামক নতুন ধরন ওমিক্রন। তখন দেশে রোগী শনাক্তের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুও বাড়তে থাকে।
এ বছর ফেব্রুয়ারি থেকে আবার নামতে শুরু করে করোনা রোগীর সংখ্যা। যদিও জানুয়ারির শেষ দিকে শনাক্তের হার কিছুটা কমে ৩০ শতাংশের নিচে নামে। ওমিক্রন আতঙ্ক কিছুটা কাটিয়ে দেশে কয়েক দিন ধরে শনাক্তের সংখ্যা কমতে শুরু করে।
এর আগে, ওমিক্রন আতঙ্কের শুরুর দিকে দেশে কয়েক সপ্তাহ ধরে শনাক্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছিল। তাই সংক্রমণ ঠেকাতে বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল সরকার। তবে ধীরে ধীরে সেসব বিধিনিষেধ তুলে নেয় সরকার।
গত বছরের মাঝামাঝি করোনার ডেল্টা ধরনের দাপটে দেশে করোনায় মৃত্যু, রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার অনেক বেড়ে গিয়েছিল। তবে আগস্টে দেশব্যাপী করোনার গণটিকা দেয়ার পর সংক্রমণ কমতে থাকে।