চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার করতে গিয়ে তাঁর ঘরের আলমারি থেকে নগদ ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল লুটে নেওয়াসহ আসামির স্ত্রী-সন্তানকে মারধরের অভিযোগে এক এসআইকে ক্লোজড করা হয়েছে। রবিবার রাতে এ বিষয়ে কালের কণ্ঠ অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশ হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাঁকে ক্লোজড করে।
ঘটনায় অধিকতর তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল করিম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার দুপুরে সীতাকুণ্ডের মুরাদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ভাটেরখীল গ্রামের নুর আহম্মদের নতুন বাড়ির বাসিন্দা একটি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি নুরুল ইসলামকে (৫০) গ্রেপ্তার করতে তাঁর বাড়িতে যান সীতাকুণ্ড থানার এসআই মাহবুব মোর্শেদ ও পুলিশ সোর্স মো. নুরুজ্জামান (৪৫)-সহ চারজন।
সাদা পোশাকে থাকা চারজনের মধ্যে এসআই মাহবুব ও সোর্স নুরুজ্জামান নুরুল ইসলামের ঘরে প্রবেশ করে তাঁকে না পেয়ে তাঁর স্ত্রী খালেদা আক্তারের কাছে আলমারির চাবি কোথায় জানতে চান। চাবি দিতে না চাইলে মাহবুব ক্ষিপ্ত হয়ে খালেদাকে লাথি মারেন। বাধ্য হয়ে চাবি দিলে মাহবুব ও নুরুজ্জামান আলমারিতে থাকা ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা ও ৮ আনা স্বর্ণালংকার, দুটি মোবাইল, তাঁদের ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষার বিভিন্ন কাগজপত্র, জন্ম নিবন্ধনের কাগজপত্র ও ইসলামী ব্যাংকে লেনদেনের কাগজপত্র প্রভৃতি নিয়ে যান।
এসব অভিযোগ জানিয়ে খালেদা আক্তার রবিবার দুপুরে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার, সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবে লিখিত অভিযোগ করেন। এ নিয়ে রবিবার রাতে কালের কণ্ঠ অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। এসব অভিযোগে রবিবার রাতেই ক্লোজড করা হয় এসআই মাহবুব মোর্শেদকে।
সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল করিম বলেন, মাহবুব মোর্শেদ আসামি গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিলেন। আসামিকে না পেলে ফিরে আসা উচিত। কিন্তু তা না করে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের গায়ে হাত দেওয়া উচিত হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে আসামির স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছি আমরা। তাই তাঁকে ক্লোজড করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই বাড়ি থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের যে অভিযোগ তা-ও তদন্ত করছি। আসলে টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিল কি-না কিংবা তা লুট হয়েছিল কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ‘
অভিযোগের বিষেয়ে জানতে চাইলে এসআই মাহবুব মোর্শেদ বলেন, আমি ওই বাড়িতে যাই ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার করতে। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামি পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। আমরাও তাকে ধাওয়া করি। এর মধ্যে আলমারির চাবি, টাকা, স্বর্ণালংকার প্রভৃতি লুটসহ অন্যান্য অভিযোগ একেবারেই পরিকল্পিত ও মিথ্যা।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।