ভর্তুকি দিয়ে সয়াবিন তেল বিক্রির মাধ্যমে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন যশোরের শার্শার উদ্ভাবক মিজানুর রহমান। চারদিন আগে যশোরের শার্শা উপজেলায় শুরু হওয়া এ প্রতিবাদ কার্যক্রম ঢাকায় পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে শেষ হবে। প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) তিনি যশোর শহরের মুজিব সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৪০ টাকা দরে বিক্রি করেন।
যশোরের শার্শা উপজেলার বাসিন্দা মিজানুর রহমান। পেশায় মোটরবাইক মিস্ত্রি হলেও উদ্ভাবনী ইচ্ছা শক্তির কারণে সরকারের এটুআই প্রজেক্টের আওতায় দেশসেরা উদ্ভাবক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
সম্প্রতি সময়ে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি অস্বাভাবিক পর্যায় পৌঁছানোর প্রতিবাদ জানাতে তিনি অভিনব পন্থা বেছে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সারা দেশে বিক্রি হবে টিসিবির পণ্য
এবিষয়ে মিজানুর রহমান বলেন, মূল্যবৃদ্ধির কারণে স্বল্প আয়ের মানুষ বিপর্যস্ত। তাদের পাশে দাঁড়াতে এবং মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানাতে এ পন্থা বেছে নেন তিনি।
গত ১১ মার্চ তিনি নিজ এলাকা যশোরের শার্শা উপজেলা শহরে ১৪০ টাকা দরে সয়াবিন তেল বিক্রির মাধ্যমে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেন। মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে মিজানুর রহমান যশোর শহরের মুজিব সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৪০ টাকা দরে বিক্রি করেন। মুহূর্তের মধ্যে তার কাছে থাকা ১৫০ লিটার তেলের বোতাল বিক্রি হয়ে যায়। তিনি আগামী রমজান মাস অবধি এ কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।
এ প্রতিবাদ কর্মসূচি ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে ভর্তুকি মূল্যে সয়াবিন তেল বিক্রির মধ্য দিয়ে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মিজানুর।
এদিকে মিজানুর রমানের কাছ থেকে কমমূল্যে তেল কিনতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তাইজেল হোসেন নামে একজন তেল ক্রেতা বলেন, ‘দোকানে ২০০ টাকার ওপরে প্রতি লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে। চলতি পথে ১৪০ টাকায় তেল পেয়ে খুব ভালো লাগছে। প্রতিবাদ জানাতে লোকসানে তেল বিক্রি বাপের জন্মেও শুনিনি।’
জাহিদুল নামে অপর একজন বলেন, ‘আমি ও আমার দুই বন্ধু মিলে তিন লিটার তেল কিনেছি। মাইকিং শুনে দাঁড়িয়ে গেছি। বিশ্বাস হচ্ছিল না, ১৪০ টাকায় এক লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারব। ব্যবসায়ীরা যেখানে মজুত করে মুনাফার চেষ্টা করছেন, সেখানে মিজান ভাইয়ের এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে।’
মিজানুর রহমান গত চারদিনে ৬০০ লিটার সয়াবিন তেল ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি করেছেন। প্রতিদিন ২০০ লিটার করে বিক্রি অব্যাহত রাখবেন।
তিনি জানান, রমজান মাস পর্যন্ত যদি তেলের দাম প্রতি লিটার ১০০ টাকাতে নেমে আসে তারপরও তিনি ভর্তুকি দিয়ে ৫০ টাকায় তেল বিক্রি করবেন।