মেসি দীর্ঘ ২০ বছর বার্সেলোনায় আছেন। বনে গেছেন ঘরের ছেলে। সম্পর্কটা শুধু পেশাদারিত্বের নয়, হৃদয়েরও। এ ক্লাবই এখন তার ভালোবাসার মন্দির। সেই ক্লাবকে কীভাবে আদালতে তুলবেন মেসি? পারেলেনও না। চুক্তির শর্ত বারবার তুলে ধরার পরও যখন উপায় পাচ্ছিলেন না, তখন ক্লাব ছাড়ার একটাই উপায় ছিল তার। সেটা আদালতে যাওয়া!
অথচ মৌসুমের শুরু থেকেই ক্লাব সভাপতি বার্তোমেউকে জানিয়ে আসছিলেন, চলে যাওয়ার কথা। ক্লাব সভাপতি তাকে মৌসুম শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু শেষে সব পাল্টে ফেলেন। উল্টো নির্ধারিত সময়ে না জানানোর ফাঁদে ফেলে আটকে রাখেন তাকে। ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট গোলডটকমকে বলেছেন এমনটাই।
তবে চুক্তিতে তার যাওয়ার সুযোগ থাকলেও কেন আদালতে গেলেন না মেসি? এমন প্রশ্নের উত্তরে আবেগ ঘন জবাব দিলেন মেসি, ‘একটি উপায় ছিল এবং তা ছিল বিচারের দিকে যাওয়া। আমি কখনোই বার্সার বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারব না। কারণ, এটা আমার ভালোবাসার ক্লাব। যারা আমাকে এখানে আসার পর থেকে সবকিছু দিয়েছে। এটি আমার আজীবনের ক্লাব। আমি এখানে আমার জীবনকে তৈরি করেছি।’
কিন্তু তারপরও নিজের ক্যারিয়ারের জন্য কঠিন এ সিদ্ধান্তটি নিতে চেয়েছিলেন তিনি, ‘আমি আরও দূরে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিলাম এবং আমি সর্বোচ্চ স্তরে প্রতিযোগিতা করতে, শিরোপা জিততে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লড়াই করতে চাই। আপনি এখানে জিততে বা হারতে পারেন। কারণ এটা খুব কঠিন। তবে আপনাকে প্রতিযোগিতা তো করতে হবে।’
‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্য অন্তত আমরা প্রতিযোগিতা করি এবং রোম, লিভারপুল ও লিসবনের মতো যেন ধসে না পড়ি। যে সিদ্ধান্তটি (বার্সা ছাড়ার) নিতে চেয়েছিলাম, তার ভাবনার পেছনে এই বিষয়গুলো ছিল।’ – যোগ করে আরও বলেন মেসি।
চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী সহজেই যেতে পারবেন, এমনটাই ভেবেছিলেন মেসি, ‘আমি ভেবেছিলাম এবং নিশ্চিত ছিলাম যে, আমি চলে যেতে পারব। সভাপতি সবসময় বলতেন যে, মৌসুমের শেষে আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারব যে আমি থাকব কিনা। এখন তারা এই সত্যকে আঁকড়ে ধরে আছে যে, আমি ১০ জুনের আগে কেন এটা বলিনি। কিন্তু দেখা যায় যে, ১০ জুন আমরা এই ভয়াবহ করোনাভাইরাস মহামারির মাঝে লা লিগায় প্রতিযোগিতা করছিলাম এবং এই রোগটি গোটা মৌসুমকে পাল্টে দিয়েছিল।’
তবে শেষ পর্যন্ত বার্সা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ কথা না রাখায় থেকে যেতে হচ্ছে মেসিকে, ‘এবং এই কারণেই আমি ক্লাবের হয়ে খেলা চালিয়ে যেতে চাচ্ছি। এখন আমি এই ক্লাবের হয়ে চালিয়ে যাব কারণ সভাপতি আমাকে বলেছিলেন যে, ক্লাব ছাড়ার একমাত্র উপায় হলো ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজ প্রদান করা এবং এটি অসম্ভব।’
কিন্তু একমাত্র যে পথে পার পেতে পারতেন সে পথ আটকে দিয়েছে মেসির ভালোবাসা ও আবেগ। তাই ক্লাবকে আদালতে নেওয়ার কথা একবারও ভাবতে পারেননি তিনি, ‘বার্সা আমাকে সব দিয়েছে এবং আমি বার্সাকে সব দিয়েছি। আমি জানি যে বার্সাকে আদালতে নেওয়ার কথা কখনো আমার মনেও আসেনি।’
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।