সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একদিকে যেমন মানুষকে হতাশায় ডোবাচ্ছে, ঠিক তার বিপরীতে অনেক মানুষের জীবন কিংবা ভাগ্য রাতারাতি বদলে দিচ্ছে এই মাধ্যম। এমন ঘটনা বিশ্বের সর্বত্র। এবার ফিলিপাইনে এমনই এক ঘটনা সামনে এসেছে। সোশ্যাল সাইটের বদৌলতে রিতা গাভিওয়ালা নামের একটি মেয়ের জীবন বদলে গেছে।
যখন মাত্র ১৩ বছর বয়স রিতা গাভিওলার সে সময়ই তার একটি ছবি ভাইরাল হয়। সেই ছবিটিই রিতার জীবন আমূল পাল্টে দেয়। এখন প্রচুর নেটিজেন রিতার প্রতি উৎসুক, উন্মুখ হয়ে থাকেন। কেননা রিতা ইনস্টাগ্রামে যেসব ছবি প্রকাশ করেন তা তরুণ হৃদয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে নেটিজেনদের দাবি।
ফিলিপাইনের লুচেনা শহরে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করতের রিতা। ২০১৬ সালে ফটোগ্রাফার তোফার ফিলিপাইনের লুসবান শহরে কুইন্টোতে এসেছিলেন। তিনি রিতার সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে একটি ছবি তোলেন। পরবর্তীকালে ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন, এটি ভাইরাল হয়ে রিতার জীবনকে বদলে দিয়েছে। সে সময় ফিলিপাইনের অনেক নামি সুন্দরী এমনকি সুন্দরী প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়নদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন রিতা গাভিওলা। আর এ কারণে মাত্র ১৩ বছর বয়সেই টেলিভিশনের রিয়ালিটি শোতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান রিতা।
মাত্র চার বছর আগে রিতাকে ফিলিপাইনের লুচেনা শহরে রাস্তায় ভিক্ষা করতে দেখা গেছে। পথে পথে হাত পেতে ভিক্ষা করে বেড়া তো যে মেয়ে, আজ সেখানে ফ্যাশন মডেল এবং অনলাইন সেলিব্রিটি। ইনস্টাগ্রামে দেড় লাখের ওপরে ফলোয়ার রয়েছে।
রিতা বাবা-মায়ের সঙ্গে যখন ফিলিপাইনের জামবাঙ্গা থেকে লুচেনা শহরে আসেন তখন একদম কিশোরী। তার বাবা একজন ময়লা সংগ্রহকারী। রাস্তা বা ডাস্টবিন থেকে ময়লা সংগ্রহ করতেন। সে সময় বাসায় রিতার মা বাচ্চাদের দেখাশোনা করতেন। রিতারা ৫ ভাই-বোন। রিতা ‘বাদজাও গার্ল’ নামেও পরিচিত। সমুদ্রে ভাসমান জীবনযাপন করা একটি সম্প্রদায়ের নাম বাদজাও সম্প্রদায়। এই সম্প্রদায় থেকেই রিতার আগমন। যার কারণে তাকে এই নামে ডাকা হয়।
যখন রিতার ছবি ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল, সেটা ৫ বছর আগের কথা- তখন তিনি অনেকের কাছ পছন্দ হয়েছিলেন। আর্থিকভাবে সহায়তাও করেছিলেন নেটিজেন ও সেলিব্রিটিরা। ছবিটি ভাইরাল হয়ে গেলে বেশ কয়েকটি ফ্যাশন ব্র্যান্ড রিতাকে একটি মডেলিংয়ে ডাকে। কিছুদিন পর টিভি শোতেও হাজির রিতা।
২০১৮ সালে, রিতা ইউটিউবে একটি ভিডিও আপলোড করেন রিতা। যাতে তিনি তার নতুন বাড়ি সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। তার আমেরিকান ফ্যান গ্রেস এই বাড়িটি তৈরি করতে সহায়তা করেছিলেন। রিতা আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ছবি নিয়ে খবরে রয়েছেন। তবে এই মুহুর্তে তার অগ্রাধিকার হল পড়াশোনা শেষ করা। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে অনেকেরই জীবন বদলে গিয়েছে। তবে তার মধ্যে যারা সর্বাধিক সাফল্য পেয়েছেন তাদের মধ্যে একজন রীতা।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।