এ ছাড়া সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নানা সংকটের মধ্যেও আট মেগাপ্রকল্পের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। সব কাজ শেষ না হলেও এরই মধ্যে বেশির ভাগ প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছে, যার সুফল পেতে শুরু করেছে দেশের জনগণ। চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটির কাজ এরই মধ্যে শতভাগ শেষ হয়েছে। কয়েকটির কাজ আবার প্রায় শতভাগ সমাপ্তির পথে।
আইএমইডির প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, মেগাপ্রকল্পগুলোর চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত গড় ভৌত অগ্রগতি ৮৮.৯১ শতাংশ। ভৌত অগ্রগতি বেশি হলেও আর্থিক অগ্রগতি তুলনামূলক কম।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাকিগুলোর কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও পদ্মা সেতুর শতভাগ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। অগ্রগতির দিক থেকে পদ্মা সেতুর পরই এগিয়ে আছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ প্রকল্পের ৯৭ শতাংশেরও বেশি কাজ শেষ হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আট মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে তিন লাখ আট হাজার ৬৮১ কোটি পাঁচ লাখ টাকা। শুরু থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত এসব প্রকল্পের আওতায় ব্যয় হয়েছে দুই লাখ ২৩ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি খরচ হয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে। এ প্রকল্পে মার্চ মাস পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৭১ হাজার ৮৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
মেগাপ্রকল্পের অগ্রগতি প্রসঙ্গে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, বড় পরিসরে কাজ করতে গেলে জনগণের ভোগান্তিও হয়। এসব কারণে বড় প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত চলমান প্রকল্পগুলো হলো পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গল লাইন ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প।
শতভাগ শেষ পদ্মা সেতুর কাজ
২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বাধন করা হয় পদ্মা সেতু প্রকল্প। সেতুর ভৌত অগ্রগতিও হয়েছে শতভাগ। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। গত মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পটির আওতায় ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ৮০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯২.২৬ শতাংশ। এটি বাস্তবায়নে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শেষ ৯৮%
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। গত মার্চ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৪ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯৩.৯২ শতাংশ। ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৭.৬১ শতাংশ।
দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথ
দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গল লাইন ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৪৮.৩৪ শতাংশ। এ ছাড়া ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৫ শতাংশ।
পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ ৯৩% শেষ
এ প্রকল্প চার হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। মার্চ মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে তিন হাজার ৭৮১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮৬.৪৫ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯২.৬০ শতাংশ।
পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগের কাজ ৯০%
পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে গত মার্চ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩১ হাজার ৮৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। আর আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮১.২৮ শতাংশ।
মেট্রো রেলের ৮৭% কাজ শেষ
২০১২ সালে শুরু হয়ে মেট্রো রেল প্রকল্পের উত্তরা-আগারগাঁও অংশের কাজ শেষ হলে ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়। এরপর গত ডিসেম্বরে মতিঝিল পর্যন্তও খুলে দেওয়া হয়েছে। মহেশখালী-মাতারবাড়ীর কাজ এগিয়েছে ৮৪.৫%
মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম (১২টি প্রকল্প যুক্ত) প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। মার্চ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩৯ হাজার ৭৫৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। কাজ হয়েছে ৮৪.৫ শতাংশ।
রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পের অগ্রগতি ৬৫.৫২%
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটির শুরু থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ভৌত অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৬৫.৫২ শতাংশ। প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৭১ হাজার ৮৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।