এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে পরাজয়ের মধুর প্রতিশোধ নিল পাকিস্তান। সুপার ফোরের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ভারত আজ বড় স্কোর করলেও তাদের বোলিং ছিল একেবারেই সাদামাটা। ফিল্ডিং ছিল বাজে। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সহজ ক্যাচ মিস করেছেন ফিল্ডাররা।
বোলাররা দিয়েছেন অতিরিক্ত রান। রিজওয়ান-নওয়াজদের তৈরি করা মঞ্চে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটের দারুণ জয় এনে দেন খুশদিল-আসিফ। গ্রুপ পর্বেও পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিল ভারত।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রান তাড়ায় নেমে ভুবনেশ্বর কুমারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে শুরু করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে এই ভালো শুরু বেশিক্ষণ আর ভালো থাকেনি। অধিনায়ক বাবর আজম টানা তৃতীয় ম্যাচে ব্যর্থ হলেন। রবি বিষ্ণোইয়ের বলে রোহিত শর্মার তালুবন্দি হয়ে ফিরেন ১৪ রান করে। পাকিস্তানের স্কোর তখন ২২। রিজওয়ান দারুণ খেলছিলেন। ফখর জামানের সঙ্গে তার জুটি জমে উঠতেই ফের ভাঙন। যুজবেন্দ্র চাহালের বলে বিরাট কোহলির হাতে ধরা পড়েন ফখর (১৫)। ভাঙে ৩০ বলে ৪১ রানের জুটি।
এরপর মোহাম্মদ নওয়াজকে নিয়ে জুটি জমিয়ে তোলেন রিজওয়ান। ৩৭ বলে রিজওয়ান টানা দ্বিতীয় ফিফটি। চাহালের করা ১৫তম ওভারে ৩ চারে আসে ১৬ রান। পরের ওভারেই তৃতীয় উইকেটে ৪১ বলে ৭৩ রানের দারুণ এই জুটি ভাঙে নওয়াজের বিদায়ে। ভুবনেশ্বর কুমারের বলে সীমানায় ধরা পড়েন ২০ বলে ৬ চার ২ ছক্কায় ৪২ রান করা নওয়াজ। শেষ চার ওভারে দরকার ছিল ৪৩ রান। ব্যাপক খরুচে হার্দিক আজ ৪ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে নেন রিজওয়ানের মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেট।
হার্দিকের করা ১৭তম ওভারের পঞ্চম বলে সূর্যকুমারের তালুবন্দি হন ৫১ বলে ৬ চার ২ ছক্কায় ৭১ রান করা রিজওয়ান। পরের ওভারে আসিফ আলীর বিপক্ষে রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয় ভারত। পরের বলেই আসিফের সহজ ক্যাচ ছাড়েন আর্শদীপ। ভারত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। ১২ বলে দরকার ছিল ২৫ রানের। ১৯তম ওভারে ভুবনেশ্বর বেদম মার খেলে শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ৭ রান। বোলার আর্শদীপ সিং। দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মেরে সমীকরণ আরও সহজ করে দেন আসিফ আলী। কিন্তু নাটকের আরও বাকি ছিল। চতুর্থ বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ৮ বলে ১৬ করা আসিফ। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। পঞ্চম বলে দুই রান নিয়ে দলকে ৫ উইকেটে জিতিয়ে দেন ইফতেখার।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮১ রান তোলে ভারত। লোকেশ রাহুল এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মা বিধ্বংসী সূচনা এনে দেন। মাত্র ৪.২ ওভারে ওপেনিং জুটি পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেলে। তবে ৫৪ রানেই এই ধ্বংসাত্মক জুটির অবসান হয়। হারিস রউফের বলে খুশদিল শাহর তালুবন্দি হন ১৬ বলে ২৮ করা রোহিত শর্মা। এর পরপরই ২০ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ২৮ রান করা লোকেশ রাহুল ফিরেন শাদাব খানের শিকার হয়ে। সূর্য আজ বেশিক্ষণ আলো ছড়াতে পারেননি। মোহাম্মদ নওয়াজের বলে আসিফ আলীর তালুনবন্দি হয়ে থেমেছে তার ১০ বলে ১৩ রানের ইনিংস।
এরপর বিরাট কোহলির ব্যাটে ১১তম ওভারে একশ ছাড়ায় ভারতের স্কোর। ঋষভ পন্থ ১২ বলে ১৪ করে শাদাব খানের শিকার হন। এরপরই ‘ডাক’ মারেন হার্দিক পান্ডিয়া। একপ্রান্ত আগলে রাখা কোহলি মোহম্মদ হাসনাইনকে ছক্কা মেরে ক্যারিয়ারের ৩২ নম্বর ফিফটি তুলে নেন ৩৬ বলে। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে রান-আউট হয়ে থামে তার ৪৪ বলে ৪ বাউন্ডারি এবং ১ ছক্কায় গড়া ৬০ রানের ইনিংস। শেষ দুই বলে দুই চার মেরে রবি বিষ্ণৌই দলের স্কোর ১৮১তে নিয়ে যান। ২টি উইকেট নেন শাদাব খান। নাসিম, হাসনাইন, হারিস এবং নওয়াজ নেন ১টি করে।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।