পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বাংলাদেশ তার কাঙ্খিত উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের সঠিক পথে রয়েছে। যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি কর্মপরিবেশ সবসময় বজায় থাকে, তাহলে আমরা অনেক ভাল করতে পারব।
রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে ‘রুপকল্প ২০৪১ বাস্তবে রূপায়ন : বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’ বিষয়ক জন অবহিতকরণ আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ সভার আয়োজন করে।
প্রেক্ষিত পরিকল্পনাকে ‘ভবিষ্যত দলিল’ অভিহিত করে এম এ মান্নান বলেন, এই পরিকল্পনা অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এবং অমিত এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর প্রয়োজন। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে গত ১২ বছরে দেশে বিভিন্ন ইতিবাচক পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন,‘আমরা সুন্দর সময় পার করছি এবং আশা করি সেটা অব্যাহত থাকবে। তবে অপ্রত্যাশিতভাবে আমরা এখন যে কোভিড-১৯ অতিমারির মুখোমুখি, তা অতিক্রম করতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন,বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সেরা পরিকল্পনা গ্রহণকারি দেশ। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিবি), প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও ব-দ্বীপ পরিকল্পনার মত ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রি পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ মুলত ভবিষ্যত নির্দেশক পরিকল্পনা যা বিভিন্ন বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। সহ¯্রাবদ্ধ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অত্যন্ত সফল দেশ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পঞ্চবার্ষিক ও এডিবির মত বিনিয়োগ পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা অর্জিত হবে।
সহজে ব্যবসা করার সূচকের উন্নতির ওপর গুরুত্বারোপ করে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষনের ক্ষেত্রে এই সূচক মূল ভূমিকা পালন করে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারে উন্নতি হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন,এর জন্য সমন্বিত কর্ম প্রচেষ্ঠা অপরিহার্য।
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, সুশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন খাতে আমরা অগ্রগতি অর্জন করেছি। এখন অধিকতর ভাল ফল পেতে সরকার বার্ষিক কর্ম সম্পাদনা চুক্তির (এপিএ) মত ফলাফল ভিত্তিক কর্মকাঠামো অব্যাহত রেখেছে।
দেশের অর্থনীতির আকার ও ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন,মাথাপিছু আয়সহ অর্থনীতির অন্যান্য সূচক যদি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাহলে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করা যাবে।
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম বলেন, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ একটি জীবন্ত দলিল এবং ২০৩০ সালে এর প্রয়োজনীয় পর্যালোচনা করা হবে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) ২০৪১ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের এবং ২০৩১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১) অনুমোদন করে। দেশের প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২০২১) বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
শামসুল আলম তার প্রবন্ধে জানান, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ পরবর্তী আগামী ২০ বছরের সুশাসন,গণতন্ত্রায়ন,বিকেন্দ্রিকরণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রাতিষ্ঠানিক স্তম্ভের ঐতিহাসিক দলিল। ২০৪১ সালে বর্তমান আর্থিক মূল্যে মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ১২ হাজার ৫০০ ডলারে।
২০৩১ সাল নাগাদ দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি পৌঁছাবে ৯ শতাংশে এবং ২০৪১ সালে তা ৯ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত হবে। ২০৩১ সালে দরিদ্র জনগোষ্ঠি দাঁড়াবে ৯ দশমিক ৪ শতাংশে। ২০৩১ সাল নাগাদ চরম দারিদ্র শুণ্যের কোটায় পৌঁছে যাবে এবং ২০৪১ সালে দারিদ্র্যের হার ৩ শতাংশ হবে।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।